আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনকে শুন্য ঘোষণা পূর্বক দ্বিতীয় দফা উপ- নির্বাচনের জন্য দিন ধার্য করে তা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন এ নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দৌড়-ঝাঁপ করছেন ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে ৪ জন নারী আর ৯ জন পুরুষ। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে নারীদের মধ্য থেকে অবস্থান এগিয়ে থাকলেও পিঁছিয়ে নেই পুরুষরাও। এঁদের মধ্যে ২/৩ জন নিজেকে রাজনৈতিক পরিচয়ে সক্রিয়তাভাব ফুটে তোলা ছাড়া অন্যান্যরা বস্তুতই মনোনয়ন লড়াইয়ে কোমড় বেঁধে লেগেছেন। তবে, মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে সকলেই নিজ নিজ নিশ্চয়তা দিয়ে দলীয় নেতা- কর্মীসহ ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। আর এ নির্বাচনের জন্য কে হচ্ছেন- নৌকা’র মাঝি। তা নিয়ে সর্বত্রই চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। আসন্ন দ্বিতীয় দফায় এ উপ- নির্বাচনের জন্য যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তাঁদের মধ্য থেকে যাকে মনোনয়ন দিলে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের মাঝে কোন মত-বিরোধ থাকবেনা। যার জন্য সবাই মাঠে কাজ করবেন। এমন মনোনয়ন প্রত্যাশাবাদকে যাতে মনোনয়ন দেয়া হয়। সে প্রত্যাশা করছেন দলের প্রবীণ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। মনোনয়ন প্রত্যাশায় উপরে লবিং- গ্রুপিং করছেন যাঁরা। তাঁরা হলেন- চলমান দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) হিসেবে ১ লাখ ১৮ হাজার ১শ’ ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রয়াত এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বড় বোন- বিশিষ্ট শিল্পপতি আফরোজা বারী, জেলা মহিলা আ’লীগের যুগ্ন- আহ্বায়ক ও প্রয়াত এমপি লিটন পত্নী সৈয়দা খুরশীদ জাহান স্মৃতি। তিনি বিগত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পেয়েছিলেন ৪’শ ৮৪ ভোট। জেলা আ’লীগের সহঃ সভাপতি ও বঙ্গবীর ওসমাণী স্মৃতি পরিষদের প্রেসিডেন্ট- সৈয়দা মাসুদা খাজা। জেলা মহিলা আ’লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান- হাফিজা বেগম কাকলী, উপজেলা আ’লীগের সাবেক ৭ বছরের সফল সভাপতি- বর্শীয়ান রাজনীতিক টিআইএম মকবুল হোসেন প্রামাণিক, সাবেক সিনিয়র সহঃ সভাপতি- জাহাঙ্গীর আলম মঞ্জু, উপজেলা যুবলীগের দীর্ঘ দিনের সাধারণ সম্পাদক- রেজাউল আলম রেজা, প্রয়াত এমপি গোলাম মোস্তফা আহমেদের পুত্র- মেহেদী মোস্তফা মাসুম, জেলা আ’লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক- সাজেদুল ইসলাম, জাতীয় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রাপ্ত শিবরাম আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক- নূরুল আলম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পৌর মেয়র- আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, সমাজ সেবক- জিল্লুর রহমান ও দিনাজপুর জেলা আ’লীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক- বিধুভূষণ সরকারসহ ১৩ জন। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ সালের শেষ দিন (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় এ আসনের নির্বাচিত সাংসদ ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি- মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহবাজ গ্রামের মাষ্টারপাড়াস্থ তাঁর নিজ ঘরেই আততায়ীদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনাবস্থায় মারা যান। ফলে আসনটি শুন্য হবার ২ মাস ২১ দিন পর অর্থাৎ, ২০১৭ সালের ২২ মার্চ উপ- নির্বাচনে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) হিসেবে ৯০ হাজার ১শ’ ৬৯ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন উপজেলা আ’লীগের তৎকালীণ সাধারণ সম্পাদক- গোলাম মোস্তফা আহমেদ। এ নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত (লাঙ্গল) প্রার্থী- শামীম হায়দার পাটোয়ারী পেয়েছেন- ৬০ হাজার ১শ’ ভোট। গত বছর (২০১৭)’র ১৮ই নভেম্বর বিকেলে এমপি গোলাম মোস্তফা আহমেদ বাড়ি থেকে নিজস্ব মাইক্রোবাসযোগে ঢাকা যাবার সময় টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার নাটিয়াপাড়া নামক স্থানে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হন। তিনি প্রথমে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকাস্থ এসএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল)-এ দীর্ঘ ১ মাস ধরে চিকিৎসা শেষে গত ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৮ টা ৩৫ মিনিটে মারা যান। ফলে আসনটি শুন্য ঘোষণা পূর্বক আগামী ১৩ই মার্চ এ আসনের দ্বিতীয় দফা উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধার্যকৃত দিন প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
খবর ৭১/ ই: