খবর৭১:এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর থেকে ॥
ঘন কুয়াশার কারণে দেশের ব্যস্ততম ও দক্ষিনবঙ্গের প্রবেশ দ্বারখ্যাত মাদারীপুরের শিবচরের কাঠালবাড়ী এবং মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে চলতি শীত মৌসুমে এ নৌরুটে ফেরি সার্ভিস প্রায় ১০০ ঘন্টা বন্ধ ছিল। এতে করে এক দিকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত সরকার, অপর দিকে নদী পার হতে আসা বিভিন্ন যানবাহন দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় দেড় লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়। এছাড়া লোকসান হয় কাঁচামাল ও পরিবহন ব্যবসায়ীদের। চরম দূর্ভোগ হয় পদ্মা নদী পারাপার হতে আসা যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। মাহসড়কে দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে আটকে থাকা যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা কনকনে শীতে প্রতিদিন অবর্ণনীয় দূর্ভোগে পড়ছেন। যাত্রীবাহী যানবাহন ও পচনশীল পন্যবাহী ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার হওয়ায় সাধারন পন্যবাহী ট্রাক দিনের পর দিন ঘাটে আটকে থাকার ঘটনা ঘটছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাঠালবাড়ী ফেরিঘাট অফিস সূত্র জানায়, শীত মৌসুমে প্রায় প্রতি রাতেই কুয়াশার প্রকোপে এ রুটের সিগন্যাল বাতি, মাকিং বয়া অস্পষ্ট হয়ে উঠলে ফেরি পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। গত ৫ ডিসেম্বর চলতি শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ হওয়া শুরু হয়। এরপর থেকে এই নৌরুটে প্রায়ই রাত ও সাকলে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে দীর্ঘ সময় জুড়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকছে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার ভোর ৪ টা থেকে সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। এর আগে গত দুই সপ্তাহে গড়ে প্রতি দিন প্রায় ৬ থেকে ১২ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিলো।
কাঠালবাড়ী ফেরিঘাট সরেজমিন ঘুরে একাধিক যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন রুটের নৈশ্য কোচ ও পন্যবাহী ট্রাকগুলো ছেড়ে এসে কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকার কারণে কাঠালবাড়ী ফেরি ঘাটে এসে আটকা পড়ে। এতে যাত্রী ও চালকদের দূর্ভোগ এবং পরিবহন ব্যবসায়ীদের আর্থিক লোকসান হয়। এ সময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন, মহাসড়কে পাবলিক টয়লেট নেই। যেগুলো আছে সেটাও তালা বন্ধ থাকে। সুতরাং নারী ও বয়স্ক যাত্রীদের দূর্ভোগ বেড়ে যায়। এ সময় অনেকেই উন্নত প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কুয়াশাকালীন সময়ে ফেরি সার্ভিস চালু রাখার দাবি জানান।
বিআইডব্লিউটিসি’র এক হিসেবে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কুয়াশার কবলে পড়ে কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুট প্রায় ১০০ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে সরকার অন্তত দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে যাত্রীবাহি যানবাহন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার হওয়ায় উভয় পাড়ে শত শত পন্যবাহী ট্রাক দিনের পর দিন আটকে আছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) কাঠালবাড়ী কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ সালাম হোসেন বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে প্রায়ই দীর্ঘ সময় জুড়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় এই নৌপথে স্বাভাবিক যানবাহন পারাপার মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে যাত্রী দূর্ভোগের পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।’
খবর৭১/জি: