চিলমারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: বন্যা, খড়া, অতিবৃষ্টি ও ভাঙ্গনের পর এবার তীব্র শীতের থাবা, ঘন কুয়াশায় টানা শৈত্যপ্রবাহে নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা, চিন্তিত হয়ে পড়েছে আলু, সরিষা ও সবজি চাষিরা। বীজতলা নষ্টের ফলে কুড়িগ্রামের চিলমারীর বোরো আবাদ পড়েছে হুমকির মুখে। হতাশায় ভুগছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকগন। কৃষকরা বলছেন, শৈত্যপ্রবাহ প্রলম্বিত হলে এ অঞ্চলের বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এবং এই কারনে বোরো চাষের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। জানুয়ারির শুরু থেকে এই অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সেই সাথে প্রকৃতি ঢেকে যায় ঘন কুয়াশায়। শীত-কুয়াশায় প্রকৃতি যখন বৈরী হয়ে ওঠে তখন মাঠে মাঠে প্রস্তুুতি চলছে বোরো আবাদের। আলু, সরিষা ও সবজি চাষিরাও বসে নেই। বিস্তীর্ণ মাঠে রয়েছে বোরোর বীজতলা। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় বেশিরভাগ স্থানেই বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোল্ড ইনজুরিতে। কৃষকরা বলছেন, বিগত আমন মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাত ও দফায় দফায় বন্যার কারণে তারা লাভের মুখ দেখতে পারেননি। বোরো আবাদ করে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই তাই তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। বিগত বছরের চেয়ে বেশি দামে ধান বীজ কিনে তৈরি করেন বীজতলা। তবে সম্প্রতি তাপমাত্রার এ বিরূপ প্রভাবে ধান চাষ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় দ্বিতীয় দফা চারা তৈরি নিয়ে শঙ্কিত চাষীরা। কৃষক আবুল হোসেন, হোসেনআলীসহ অনেকে বলেন গত বছরের চেয়ে বস্তায় ১০০ টাকা বেশি দিয়ে ধান বীজ কিনে বীজতলা তৈরি করেছেন। গত কয়েকদিনের তীব্র ঠান্ডায় বীজতলা সাদা আবার কোথাও কোথাও পোড়া যাওয়ার মতো হয়ে গেছে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে চারা। কৃষক নজির হোসেন বলেন, এমনিতো ধান আবাদে তেমন কোন লাভ নেই। তারপর যদি বীজতলা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর উপায় থাকবে না। শুধু বীজতলাই নয় শীতের তীব্র থাবার আঘাতে আলু, সরিষা ও সবজি ক্ষেতও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির মধ্যেই পচে যাচ্ছে বিভিন্ন সবজি ক্ষেত। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ খালেদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এ বছর সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষক ইতোমধ্যে ৪শ’ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় ধান রোপণের কাজও শুরু করেছেন কৃষক। তবে শৈত্যপ্রবাহে কিছু কিছু বীজতলা নষ্ট হলেও অধিকাংশ এলাকার কৃষক কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা পেতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
খবর ৭১/ ই: