জাহিরুল ইসলাম মিলন।।যশোর প্রতিনিধিঃ
যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে বেনাপোল পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে রয়েছে দুই হাজারেরও বেশি গাছ। এরমধ্যে অনেকের বয়স পার হয়েছে শতবছরে। শতবর্ষী এ গাছগুলো আসলে কালের সাক্ষী। সড়কটি পরিচিত যশোর রোড নামে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও এই সড়কটির রয়েছে সমান ভূমিকা। প্রসিদ্ধ যশোর রোড চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই। এজন্য সড়কটির দুই পাশে থাকা নতুন-পুরনো সব গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে গেল কয়েকদিন ধরে আলোচনা-সমালোচনায় সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
এবার এই আলোচনায় যোগ দিলেন নায়ক ওমর সানী, গাছগুলো না কাটার অনুরোধের পাশাপাশি এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। ফেসবুকে দেয়া ওমর সানীর পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো ইত্তেফাক অনলাইনের পাঠকদের জন্য।
আমি যশোরের সন্তান নই, আমি বরিশালের সন্তান। বাংলাদেশ ও ভারতের সড়কপথের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক যশোর রোড। এই যশোর রোড নানা কারণে বিখ্যাত। মৌসুমী ভৌমিকের বিখ্যাত গান রয়েছে যশোর রোড নিয়ে। বিখ্যাত মার্কিন কবি অ্যালেন্স গিলবার্গ যশোর রোড দিয়ে নৌকায় করে বাংলাদেশের মাটিতে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়। তিনি কবিতা রচনা করেছিলেন যুদ্ধাক্রান্ত বাংলাদেশ দেখে।
যশোর রোডের দু’ধারে রয়েছে সারি সারি শতবর্ষী গাছ। এ গাছ আমাদের ঐতিহ্য। এ গাছ আমাদের অহংকার, আমাদের সোনালী রক্তঝরা অতীতের সাক্ষী। কানাডার নায়াগ্রা জলপ্রপাত যেমন তাদের ঐতিহ্য আমাদের যশোর রোডও তেমন একটি ঐতিহ্য। আজ দেশের উন্নয়নের জন্য গাছগুলোকে কাটার কথা ভাবা হচ্ছে। যা শুনে আমি ব্যথিত। আমার হৃদয় আজ ক্রন্দনরত।
আমরা উন্নয়ন করবো, হয়তো নতুন চারাগাছও রোপন করব। কিন্তু শতবর্ষী গাছগুলোর অবস্থায় কি আনতে পারবো নতুন চারাগাছগুলোকে? তাই আমি সংশ্লিষ্টদের নিকট আহবান জানাই দেশের ঐতিহ্যকে রক্ষা করে বিকল্প উপায় ভাবার জন্য। আমি বিশ্বাস করি আমরা যদি চাই, তাহলে গাছগুলোকে বাঁচাতে পারব। প্রকৃতি তার মতো থাকুক না, আমরা আমাদের মতো। জয় হোক প্রকৃতির, জয় হোক বাংলাদেশের।