উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলচাঁদের মেলা হিজলডাঙ্গায় প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো। গভীর রাত পর্যন্ত এই মেলা চলে। প্রচন্ড শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে দূর-দূরান্তের ভক্তরা ‘পাগল চাঁদের’ মেলায় উপস্থিত হন। শতাব্দীর প্রাচীন পাগল চাঁদের মেলা বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিনে শুরু হয় বলে অনেকে পৌষ সংক্রান্তী মেলা বলে থাকেন। সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের হিজলডাঙ্গায় শত বছরের পুরণো ঐহিত্যবাহী এই মেলা চলে আসছে। মেলাকে ঘিরে স্থানীয় চারটি গ্রাম জুড়ে উৎসবে পরিণত হয়। ওই এলাকার বাড়িতে বাড়িতে মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনদের আগমন ঘটে। রস চিতইসহ বিভিন্ন শীতের পিঠাও তৈরি করা হয়। যশোর, খুলনা, মাগুরাসহ নড়াইলের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় হিজলডাঙ্গার এই মেলাকে ঘিরে। মেলার মাঠ জুড়ে ছোট-বড় দুই শতাধিক স্টলে হরেক রকম মিষ্টি, রসগোলা, চমচম, জিলেপী, জামাইভোগ, চানাচুর, পানের খিলি, ফুলের চারা, চুড়ি-ফিতা, বাঁশ, বেত, কাঠ ও লোহার তৈরি শিল্পকর্মসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানীরা। জমজমাট বেচা-কেনায় দোকানীরাও খুশি। মেলায় ধর্মীয় গুরু পাগল চাঁদের স্মরণে আলোচনা সভা, ভক্তিগীতি, নামকীর্তন ও প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়। মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক স্বপন রায় জানান, জনশ্রুতি রয়েছে হিন্দু ধর্মীয় গুরু পাগল চাঁদের মানবিকসহ অনেক অলৌকিক গুণাবলী ছিল। ১৯৩৫ সালে এ ধর্মগুরুর মহাপ্রয়াণ ঘটে। তার মৃত্যুর পর থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বর্তমানে হিজলডাঙ্গায় পাগল চাঁদের সমাধিস্থলে কোন মনবাসনা নিয়ে মানত করলে রোগব্যধিসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে যায় বলেও ভক্তরা মনে করেন। এদিকে মেলায় নড়াইল পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করায় নড়াইল পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা। তাঁরা এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, এ মেলায় প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। পুলিশ এ ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করায় মেলায় আগত দর্শকেরা সত্যিই নিরাপদে মেলা উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন।