খবর ৭১: ২০১৭ সাল দেশে ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। সিপিডি বছরে দুই-তিনবার দেশের অর্থনীতি নিয়ে পর্যালোচনা করে। এবারের পর্যালোচনা শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, চলতি বছরও ব্যাংক খাতের ঘটনাগুলোর কোনো নিরসন হবে বলে মনে হচ্ছে না। ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি দিয়ে বোঝা যায়, সংস্কারের বিষয়ে সরকারের মনোভাব কী রকম ছিল।
গত কয়েক বছর ধরে বাড়তে থাকা প্রবৃদ্ধির সুফল গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারাও ছিল সরকারের বড় ব্যর্থতা। এমন বাস্তবতায় নির্বাচনের আগে এ সংকট সমাধানের মতো রাজনৈতিক পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষমতাও নেই বর্তমান সরকারের জানিয়ে সিপিডি’র পরামর্শ হচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য সংযত অর্থনৈতিক নীতি প্রনয়ণের।
ব্যাংকখাতের ভয়াবহ কেলেঙ্কারিসহ নানামুখী অর্থনৈতিক দুর্বলতকে সঙ্গী করে জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে সরকার। যা আরও খারাপ হতে পারে বছরের শেষ দিকে। দেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এমন পর্যবেক্ষন দিয়েছে গবেষণা সংস্থা সিপিডি।
সিপিডির মতে, গত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও তার বিপরীতে বেড়েছে সম্পদের বৈষম্য। ফলে সুফল পৌঁছায়নি গরীব মানুষের কাছে। এমন অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে আরও সংযতভাবে অর্থনৈতিক নীতি প্রনয়ন এবং বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশের বস্ত্রখাত এখন কয়েক বিলিয়ন ডলারের। যার মূল নিয়ামক হলো তুলা। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসে এই পণ্য আমদানির পেছনে খরচ হয়ে গেছে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। যা বছর ব্যবধানে বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। অথচ এই সময় নতুন কারখানাতো দূরের কথা পুরনো কারখানায়ও ব্যবহার বাড়েনি খুব বেশি। প্রতি বছর ৮ থেকে ৯ বিলিয়ন ডলার পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০ ভাগই আমদানি-রপ্তানীতে মূল্যকারসাজির মাধ্যমে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) খতিয়ে দেখা উচিত।
অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এই তথ্যে একরকম হতভাগ সিপিডিও। তাই তাদের আশঙ্কা নির্বাচনের আগে এসে আমদানির অযুহাতে ঘটতে পারে অর্থ পাচারের ঘটনা।
সিপিডির মতে, রোহিঙ্গাদের কারণে বনাঞ্চল উজার হওয়ায় এরই মধ্যে ক্ষতি গুণতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭শ’ কোটি টাকার। আর ফেরত পাঠাতে গেলে আরও খরচ বাড়বে কয়েক বিলিয়ন ডলার।