খবর ৭১: বর্ণবাদী ও নোংরা’ মন্তব্যে জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত আফ্রিকান ইউনিয়নের মিশন ট্রাম্পের মন্তব্যকে বেদনাদায়ক, ভীতিকর ও অপমানজনক বলে আখ্যা দিয়েছে। মিশন বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসন আফ্রিকানদের ভুল বুঝেছে। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে অভিবাসন নীতি নিয়ে এক বৈঠকের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হাইতি, এল সালভাদর ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশ নিয়ে খুবই ‘নোংরা ও বর্ণবাদী’ মন্তব্য করেন। তিনি এসব দেশকে ‘শিটহোল’ বা ‘পায়খানার গর্তে’র সঙ্গে তুলনা করেন বলে মার্কিন কয়েকটি গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়।
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসব শব্দ ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন। তাকে সমর্থন করেন দু’জন রিপাবলিকান। গতকাল শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক টুইট করে বলেন, ‘আমি হাইতির মানুষ সম্পর্কে বাজে কিছু বলিনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল সহ অনেক সংবাদপত্রেই বৃহস্পতিবার এই খবর প্রকাশিত হয়। এর কোন প্রতিবাদ হোয়াইট হাউজ থেকে করা হয়নি।
বৈঠকে থাকা ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর ডিক ডারবিন দাবি করছেন, প্রেসিডেন্টকে বর্ণবাদী শব্দ একবার নয়, কয়েকবার ব্যবহার করেছেন। তিনি কিছু আফ্রিকান দেশকে ‘শিটহোল’ বলে বর্ণনা করেছেন।
‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, গতকাল প্রেসিডেন্ট যে শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন, হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে, ওভাল অফিসে বসে এর আগে কখনো আর কোনো প্রেসিডেন্ট তা বলেছেন কি না’, যোগ করেন ডিক ডারবিন।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সিনেটরদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই বৈঠক করেন। বৈঠকের একপর্যায়ে অভিবাসন সম্পর্কে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ বা এ রকম বিপর্যয়ের শিকার দেশগুলোর মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বরং উচিত নরওয়ের মতো দেশ থেকে অভিবাসীদের আনা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এসব ‘শিটহোল’ দেশ থেকে কেন লোকজনকে আমাদের দেশে আনতে হবে।’
বোতসোয়ানা সেদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এসব কথাবার্তা চরম দায়িত্বহীন, নিন্দনীয় এবং বর্ণবাদী।
আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা বলেছে, তাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য শুনে শংকিত। তাঁরা তাঁকে এ জন্য দুঃখ প্রকাশের আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল বলেছেন, যদি প্রেসিডেন্ট এসব কথা সত্যিই বলে থাকেন সেটা স্তম্ভিত হওয়ার মতো এবং লজ্জাজনক। তিনি বলেন, এটাকে `বর্ণবাদী` বলা ছাড়া আর কিছু বলার সুযোগ নেই।
আর যুক্তরাষ্ট্রে অশ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের একটি সংগঠন `ন্যাশনাল এসোসিয়েশেন ফর দ্য এডভান্সমেন্ট অব কালারড পিপল` বলেছে, প্রেসিডেন্ট দিনে দিনে আরও বেশি করে বর্ণবাদ আর বিদেশি বিদ্বেষের গর্তের গভীরে ঢুকে যাচ্ছেন।
খবর ৭১/ইঃ