খবর৭১: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধারাবাহিক দ্বিতীয় মেয়াদে আজ শুক্রবার পঞ্চম ও শেষ বছরে পদার্পণ করবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের পরে আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন। এই ভাষণ একই সাথে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনে সম্প্রচার করবে।
গত ৪ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জন ছিল বিশাল। আন্তর্জাতিক মর্যাদা, সুনাম ও নানামুখী স্বীকৃতি অর্জন করেছে তাঁর সরকার। পালিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের মাধ্যমে তিনি ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ এবং ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট’ হিসেবে অনন্য স্বীকৃতি অর্জন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গতবছর অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য নিরসন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, পুষ্টি, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং নারীর মতায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৬–১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৩২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার এবং রফতানির পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬১০ ডলার। এ সময়ে মুদ্রাস্ফীতি বিগত ৫৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দারিদ্র্য হার ৫৭ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশ। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছর।
বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্য পূরণের সুবাদে দেশের ১৬২ মিলিয়ন জনসংখ্যা একটি ডিজিটালাইজড জ্ঞানভিত্তিক সমাজে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য–আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ উন্নত দেশে পরিণত করতে চায়।
বর্তমানে দেশের প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং বাংলাদেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট।
গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৬ অনুযায়ী লিঙ্গ সমতার দিক দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে এবং নারীর রাজনৈতিক মতায়নের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম স্থানে রয়েছে।
গতবছর পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, মেট্রো– রেল, রামপাল বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ ও দোহাজারী–কক্সবাজার–ঘুনধুম রেললাইনের মতো মেগা প্রকল্পগুলোতে গতি সঞ্চার হয়েছে। গতবছর ৩০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন, যার মাধ্যমে দেশ বিশ্ব পারমাণবিক জগতে প্রবেশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প এবং দেশের সবচেয়ে বৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে এবং ইতিমধ্যে এর ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফেনী জেলার মহীপালে দেশের প্রথম ছয় লেনের ফ্লাইওভারের কাজ নির্দিষ্ট সময়েই শেষ হয়েছে এবং গত ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন।
খবর৭১/জি: