খবর ৭১:
১০ জানুয়ারি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এদিন প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম জয়টা এসেছিল একেবারে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে। তখনকার টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দলটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতেছিল ২২৬ রানের বড় ব্যবধানে।
২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক। শুরুটাই বিশ্ব ক্রিকেটকে নাড়িয়ে দিয়ে। এশিয়ার পরাশক্তিদের বিপক্ষে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ইনিংসে ৪০০ রানের বড় এক পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। আমিনুল ইসলাম বুলবুল অভিষেক ম্যাচেই ১৪৫ রানের এক ইনিংস খেলে নাম তুলেন ইতিহাসের পাতায়।
দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েও এক রাশ হতাশা নিয়ে শেষ করতে হয় টেস্টটা। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯১ রানে গুটিয়ে গিয়ে পরাক্রমশালী ভারতের কাছে ৯ উইকেটের বড় হার মেনে নিতে হয় টাইগারদের।
এরপর কেটে যায় পাঁচটি বছর। ‘দেবো দেবো’ করেও আর জয় ধরা দেয় না। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে তখন চারদিকে তুমুল সমালোচনা। ভক্ত সমর্থকদের মনে তখন একটাই প্রশ্ন, আর কতদিন সাদা পোশাকে প্রতিপক্ষের হাসি-তামাসার পাত্র হবে টাইগাররা?
শেষ পর্যন্ত সুদিনের দেখা মিলল। ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে তখনকার সময়ে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহটা পেয়েছিল হাবিবুল বাশারের দল। জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণ সামলে ৪৮৮ রানের পাহাড়সমান পুঁজি দাঁড় করায় টাইগাররা। অধিনায়ক হাবিবুল বাশার করেন ৯৪ রান, রাজিন সালেহ ৮৯।
জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ রফিকের ঘুর্ণি আর মাশরাফি বিন মর্তুজার গতিতে ৩১২ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। রফিক ৬৫ রানে ৫টি, মাশরাফি ৫৯ রানে নেন ৩ উইকেট।
১৭৬ রানের বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে তাড়াহুড়ো করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। এবারও হাবিবুল বাশার খেলেন ৫৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস। জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮১ রানের।
এত বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এবার এনামুল হক জুনিয়রের বোলিং তোপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। বাঁহাতি এই পেসার একাই ৬ উইকেট নিয়ে সফরকারিদের গুটিয়ে দেন ১৫৪ রানে। মাশরাফি আর তাপস বৈশ্য নেন ২টি করে উইকেট।
প্রথম টেস্ট জয়ের পর উজ্জীবিত বাংলাদেশ টেস্ট ইতিহাসে নিজেদের প্রথম সিরিজ জয়ও পায় ওই সিরিজে। দ্বিতীয় টেস্টে ড্র করে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় হাবিবুল বাশারের দল।