সেলিম হায়দার,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা তালায় বাঙের ছাতার ন্যায় গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। তালা হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সামনে অবস্থিত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলো কোন প্রকার সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই অবাধে পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন সময় তাদের পক্ষে সদর হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গিয়ে ভিঁড় জমায় রোগী টানতে। অভিযোগ রয়েছে ডাক্তারদের সাথে রয়েছে সেন্টারগুলোর ব্যাপক সখ্যতা। ডাক্তাররাও কারণে-অকারণে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য পাঠান তাদের কাছে। সূত্র জানায়,তারা রোগী প্রতি সেন্টারগুলো থেকে নিয়মিত কমিশন পেতেই মূলত তাদের কাছে রোগী পাঠান। তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর কোন অভিজ্ঞ ডাক্তার বা টেকনিশিয়ান না থাকায় প্রায়ই তারা ভুল রিপোর্ট দিয়ে থাকেন।
অভিযোগে প্রকাশ,ডায়াগনষ্টিক সেন্টার খুলতে ৯টি শর্ত’র অধিকাংশই তাদের নেই। শর্তগলো হচ্ছে,সেন্টার বা প্রতিষ্ঠানের চুক্তিনামা কাগজপত্র,ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স,ইনকাম ট্যাক্স,সেনেট্যারীর প্রত্যয়নপত্র,ল্যাবের জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তার,এক জন টেকনিশিয়ান,আয়া এক জন, সুইপার এক জন ও জেলা সিভিল সার্জন থেকে অনুমতি পত্র। অভিযোগে আরো জানা যায়,তালায় এধরণের মোট ৫ টি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে। সেগুলো হল,সততা ডায়াগনষ্টিক সেন্টার,জেএস ডায়াগনষ্টিক সেন্টার,কপোতাক্ষ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার,তালা ডায়াগনষ্টিক ও জনসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার।
সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে দেখা যায়,কোন সেন্টারেই কোন ডাক্তার নেই। নেই কোন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান,নেই আয়া,সুইপার। এই অসংখ্য নেই এর ভীড়ে এগিয়ে চলেছে তালার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলো। এব্যাপারে উপজেলা সেনেট্যারী ইন্সপেক্টরের পরিদর্শন বা তদারকির কথা থাকলেও তিনি কোন কাজই করেননা। এতে করে সেন্টারগুলো এক প্রকার অবাধে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে আগত রোগী সাধারণ বা হাসপাতালের বাইরে ডাক্তারদের বিভিন্ন প্রাইভেট প্রকটিশনারের কাছে আগত রোগীরা অভিযোগ করে বলেন,প্রয়োজনের বাইরেও ডাক্তাররা অহেতুক তাদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষার নামে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোতে পাঠিয়ে দেন। তবে সে রিপোর্টগুলোর অধিকাংশই কোন কাজে না আসায় তা ভূল কিংবা সঠিক তা খতিয়ে দেখা হয়না। ইতোপূর্বে পুরুষ রোগীর ইউরিন পরীক্ষাতেও এসেছে আকাশ কুসুম রিপোর্ট। যেমন,পুরুষের রিপোর্ট হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় মহিলার আর মহিলার রিপোর্ট পুরুষের হাতে। আর বিপত্তিটা মূলত সেখানেই। ঐ রিপোর্টে দেখা যায় পুরুষ ব্যক্তিকেই অন্তঃস্বত্তা দেখানো হয়। আর এতে রীতিমত বিপাকে পড়েন উভয় রোগীই।
এব্যাপারে কপোতাক্ষ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আব্দুস সামাদের সাথে কথা হলে তিনি জানান,তারা নতুন মানুষ তাই আইন কানুন সম্পর্কে তারা অতটা জানেননা। এলাকাবাসীর প্রশ্ন যারা নিয়ম নীতির কিছুই জানেননা,তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো খললেন কিভাবে? আর খুললেও তা এখনো টিকে আছে কি করে?
সততা ডায়াগনস্টিকের মালিক শরিফুল ইসলাম জানান,তাদের অভিজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন তবে তাৎক্ষণিক তার নাম বলতে পারেননি। জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পলাশ শেখ জানান,তার অভিজ্ঞ ডাক্তারের নাম যিষ্ণু পদ মুখার্জী। তবে বাস্তবতা বলছে,যিষ্ণু পদ মুখার্জী সরকারি হাসপাতালের এক জন অবসর প্রাপ্ত ডাক্তার। তিনি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে তার একটি নিজস্ব ক্লিনিক পরিচালনা করেন।
এব্যাপারে কথা হয়,তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা কুদরত-ই-খুদা’র সাথে। তিনি বলেন,হাসপাতালের কোন ডাক্তারের সাথে ডায়াগনষ্টিক কোন সেন্টারের কারো সম্পর্ক নেই।
সর্বশেষ এলাকার ভূক্তভোগী রোগী সাধারণরা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর অবিরত প্রতারণার হাত পরিত্রাণ পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খবর৭১/এস;