সুন্দরগঞ্জের প্রেমিককে হত্যার অভিযোগে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ: প্রেমিকা উদ্ধার

0
551

খবর৭১:
আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্রেম করে অবশেষে পালিয়ে বিয়ে করায় রিপন চন্দ্র দাশ (২২) নামে প্রেমিককে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে প্রেমিকার স্বজনের বসতবাড়ি ও দোকানের ব্যাপক ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। হত্যা মামলা না নেয়া পর্যন্ত লাশ গ্রহণ করছেন না নিহতের পরিবার।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ ও বগুড়ার কাহালু থানা পুলিশের যৌথ কাহালু পৌরসভার কাইটপাড়াস্থ জনৈক গঙ্গা রাম দাশের বাড়ি থেকে প্রেমিক রিপনসহ প্রেমিকা (১৫ কে গ্রেপ্তার ও উদ্ধার করেন পুলিশ। এরপর বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে একটি মাইক্রোবাস যোগে কাহালু থেকে সুন্দরগঞ্জে আনার সময় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার গোপীনাথপুরের জুনদহবাজার নামক স্থানে ঢাকা-রংপুর মহা-সড়কে একটি ট্রাক চাপায় রিপন নিহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা গেছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। নিহত রিপন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের জেলেপাড়াস্থ বাবলু চন্দ্র দাশের ছেলে। এ নিয়ে কথা হলে জনৈক রওশন আলমসহ স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী সুরেশ চন্দ্র দাশের মেয়ে (১৫)’র সঙ্গে রিপনের প্রেম নিবেদন চলে আসছিল। টের পেয়ে মেয়েকে অন্যত্রে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয় সুরেশ চন্দ্র। তা বুঝতে পেয়ে গত ২৯ মে পরিবারের সবার অলক্ষ্যে প্রেমিকাসহ কাহালু পৌরশহরের কাইট পাড়াস্থ গঙ্গারাম দাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে এফিডেভিট মূলে বিয়ে তারা। এ নিয়ে সুরেশ চন্দ্র সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজু মিয়া ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে কাহালু থানা পুলিশের সহায়তায় অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার পূর্বক অপহৃতাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় পর লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট থানায় হত্যা মামলা না নেয়া পর্যন্ত পরিবারবর্গ লাশ গ্রহণ করছেন না। রিপনকে বহণকারী মাইক্রোতে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ সুরেশ চন্দ্র তার স্বজনরা ওই মাইক্রোতে ছিলেন। রিপনের পরিবারের অভিযোগ মাইক্রোতেই তাকে হত্যা পর ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা সুরেশ চন্দ্র ও তার স্বজনের বাড়ি ও দোকানের ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এব্যাপারে কাহালু থানা অফিসার ইনচার্জ-নূরে আলম সিদ্দিকী মুঠোফোণে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে রিপনকে গ্রেপ্তার ও অপহৃতাকে উদ্ধার করা হয় গঙ্গারামের বাড়ি থেকে। গঙ্গারাম রিপন দাশের নিকটাত্মীয়। পলাশবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ নামাজে রয়েছেন জানিয়ে ডিউটি অফিসার- এএসআই রুবেল মিয়া বলেন, রিপন চন্দ্র দাশ নামে এক আসামী পালানোর চেষ্টাকালে ট্রাক চাপায় আহত হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। লাশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। তবে অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা- এসআই রাজু মিয়াকে মোবাইল ফোণে পাওয়া যায়নি।
থানা অফিসার ইনচার্জ- মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান বলেন, নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণের দায়ে রিপন চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে অপহৃতার বাবা সুরেশ চন্দ্র দাশ একটি মামলা করেন। এ মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কাহালু থেকে অপহৃতাকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী রিপনকে গ্রেপ্তারের পর মাইক্রোবাসযোগে থানায় আনা হচ্ছিল। পলাশবাড়ির গোপীনাথপুর জুনদহবাজারে প্র¯্রাব করার কথা বলে রিপন চন্দ্র মাইক্রোবাস থেকে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় একটি দ্রুত গামী ট্রাক তাকে চাপা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার রিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যপারে পলাশবাড়ি থানায় একটি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান- আবু সোলায়মান সরকার, ধোপাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান রাজু, থানা অফিসার ইনচার্জ- মুহাঃ আতিয়ার রহমান, পরিবারকে লাশ গ্রহণের জন্য বলেন। কিন্তু, পরিবার থেকে হত্যা মামলা না হওয়া পর্যন্ত লাশ গ্রহণ করছেন না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here