খবর ৭১ঃ শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহনীয় মাত্রায় ঘুষ নেয়ার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নয়, মন্ত্রীরাও দুর্নীতি করে, তাই ঘুষ না নিতে বলার সাহস আমার নাই বক্তব্যে সরকারের দুর্নীতির প্রতিধ্বনী বলে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে দুর্নীতিবাজরা আরও উৎসাহিত হবে বলে। প্রমাণিত হলো বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ।
তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তার বক্তব্য দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে। দুর্নীতির সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ হতে পারে না। অবশ্য দুর্নীতি শতভাগ বন্ধ করা উচিত। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এটা শিক্ষামন্ত্রীর মনের কথা নয় হতাশার বহিঃপ্রকাশ। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করতে না পেরে তিনি হয়ত এমন কথা বলেছেন। কোনো শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন লোক এমন মন্তব্য করতে পারেন না।
নেতৃদ্বয় বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি গর্হিত কাজ, অপরাধমূলক কর্মকান্ড। অল্প অংকের ঘুষ হোক আর বেশি অংকের ঘুষ হোক দুটিই সমান অপরাধ। তার বক্তব্যে সরকারের অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী এমন মন্তব্য করে দুর্নীতিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তার বক্তব্যের মানে হলো সরকার ও তার মন্ত্রণালয় দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি তাই স্বীকার করলেন।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, স্পীড মানি ছাড়া কোনো কাজ হয় না। সব কিছুতেই ঘুষ লাগে। দুর্নীতির এ ধরনের প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। দেশের শিক্ষামন্ত্রীর যদি এই বক্তব্য হয়, তাহলে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সততা, নৈতিকতার পাঠ কোথায় নেবে? শিক্ষামন্ত্রী এক ভয়ঙ্কর বার্তা পাঠালেন শিক্ষাঙ্গনে- তার বক্তব্যে এটাই ফুটে উঠছে যে, ছাত্র-ছাত্রীরা তোমরা নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ এবং ন্যায়বোধের বিবেকশাসিত উন্নত মানুষ হওয়ার বদলে তোমরা সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির পাঠ নিতে শেখো, তাহলেই তোমাদের সাফল্য আসবে। তার কথায় মনে হয়- সৃজনশীল, সৌম্য, সুশিক্ষিত মানুষ হওয়ার বদলে ছাত্ররা বখাটে হোক।
নেতৃদ্বয় বলেন, তার এই বক্তব্যে আরো প্রতীয়মান হয় যে, তিনি চাচ্ছেন- ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্ঞানদীপ্ত প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আদর্শ জীবন গঠনে উদ্বুদ্ধ না হয়ে বরং দুর্নীতি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দলবাজি, দুর্বৃত্তপনা, ইভটিজিং, মাদকসহ লুটপাট করার অর্থবিত্তের কাছে নতি স্বীকার করতে শিখুক। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে জাতির হৃদয়ের স্পন্দনকে থামিয়ে দেয়ার সামিল। দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্যকর অমানিশার মধ্যে তার এই বক্তব্য দেশের জন্য আরো ভয়াবহ উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে।
খবর ৭১/ইঃ