গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় নিখোঁজ এক মাদ্রাসা ছাত্র তিন বছর আগে খুন হয়েছেন বলে সম্প্রতি জানতে পেরেছে পুলিশ। জেলা পিবিআইয়ের এস আই আরিফুর রহমান ফারাজি বলেন, উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামের জয়নাল মোল্লার ছেলে ইবাদত (২০) ২০১৪ সালের ১৫ অক্টেবর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। সম্প্রতি ওই এলাকার বক্কার তাজ ও তার ভাই নাসির তাজকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা স্বীকার করেন ইবাদতকে খুন করা হয়েছে। ইবাদত গোপালগঞ্জ শহরের মুসলিম এতিমখানা ও ইসলামি মিশন মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন বলে তার মা ফুলজান বেগম জানিয়েছেন। ইবাদতের আগে তার বাবা জয়নাল মোল্লাকেও হত্যা করা হয় বলে পরিবারটির অভিযোগ।
ফুলজান বলেন, জমির বিরোধের জেরে প্রথমে তার স্বামীকে এবং পরে ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়। তিনি আরো বলেন, আমাদের জমি দখলের জন্য ২০১৩ সালে প্রতিপক্ষ দক্ষিণপাড় গ্রামের কাদের শেখ আমার স্বামী জয়নাল মোল্লাকে হত্যা করে। এর পরের বছর ছেলে নিখোঁজ হলে তাকেও হত্যা করা হয়েছে বলে আমি অভিযোগ করে আসছিলাম। এ ঘটনায় তারা সাতজনের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা করলেও পুলিশ হত্যা নয় বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে তিনি নারাজি দিলে মামলা পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইতে যায়।
পিবিআইয়ের এস আই আরিফুর বলেন, তদন্তে নেমে তারা মামলার ৬ নম্বর আসামি বক্কার তাজকে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় নাসিরকে। বক্কার ও নাসির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। দক্ষিণপাড় গ্রামের কাদের শেখসহ সাতজন মিলে ইবাদতকে গলা কেটে হত্যা করে। বক্কারের বরাতে এস আই আরিফুর আরো বলেন, ইবাদত বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে কাদের শেখ, কাবুল শেখ, লালন শেখ ও রিপন শেখ তাকে একটি থ্রি হুইলারে তুলে কাদের শেখের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। কাদেরের ঘরের পেছনে নিয়ে মুখ চেপে মারধর করার পর কাদের, তার ছেলে রিপন ও লালন, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আউয়াল, নাসির ও বক্কার তাকে চেপে ধরে। আর দা দিয়ে গলা কাটে নাসিরের ভাই কাবুল। পরে কাদেরসহ দুই-তিনজন নৌকায় করে বিলের মধ্যে নিয়ে ইবাদতের লাশ পুঁতে রাখে। তবে পুলিশ এখনও তদন্ত শেষ করেনি বলে জানিয়েছেন এস আই আরিফুর।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ লাশ খুঁজে বের করার চেষ্টায় আছে। লাশ না পাওয়া গেলে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই তদন্ত শেষ হতে পারে বলে তিনি জানান।
খবর ৭১/ ই: