খবর ৭১: অনেক শঙ্কা, অভিযোগ, বর্ক-বিতর্কের মধ্যে শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) ভোটগ্রহণ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরামহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে দুয়েক কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে বলে জানা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে।
দলীয় প্রতীকে রংপুর সিটিতে এটিই প্রথম নির্বাচন। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তাদের প্রধান বিরোধী দল-বিএনপি ও এরশাদের জাতীয় পার্টির তিন প্রভাবশালী প্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তারা প্রত্যেকে সকালে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ও কারচুপি না হলে জয়ের ব্যাপারে আশার কথা জানিয়েছে। এছাড়া রসিকে আরও ৪জন প্রার্থী রয়েছেন মেয়র পদে।
ভোট শুরুর পর বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা বেশ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন।
এদিকে রাজধানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, রাতে দলীয় নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতা ও প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণের কথা বলেছেন রিজভী।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু জাতীয় পার্টিকে ইঙ্গিত করে ভোটকেন্দ্রের আশপাশে বাঁশের লাঠি রাখার অভিযোগ করেন। সেই সাথে নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এরশাদ ও তার প্রার্থী মোস্তফা কারো বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না তুলে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের কথা জানিয়েছেন নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে।
রংপুরের এ নির্বাচনে বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে সাধারণ ভোটাররা সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ মিলেছে। যদিও কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেন। আর একটি কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির খবর পাওয়া গেছে।
তবে, দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা- সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রসিক নির্বাচনে তার সন্তোষের কথা জানান। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ভালো উপস্থিতি নিয়েও সন্তোষের কথা জানান সিইসি।
প্রসঙ্গত, রংপুরে এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ প্রার্থী। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১১ জন এবং সংরক্ষিত ১১ ওয়ার্ডে ৬৫ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রংপুর সিটিতে ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। ৩৩ ওয়ার্ডে ১৯৩ কেন্দ্রে গ্রহণ করা হয় ভোট। ১৯৩ কেন্দ্রের মধ্যে ১০৮ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। তাই, নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।