ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ অনার্স (স্নাতক) প্রথম বর্ষের বর্ধিত ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে ষষ্ঠদিনের মত আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি না মেনে নেয়ায় তিন দিন সরকারী ছুটির পর রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ষষ্ঠদিনের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে তারা।
দুপুর বারোটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের হাতে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা টাকার গাছ নয়’, ‘শিক্ষা কোন পণ্য নয়, শিক্ষা মোদের অধিকার’, ‘অবিলম্বে বর্ধিত ফি প্রত্যাহার করতে হবে’, ‘তেল নুন পেয়াজের মত শিক্ষা কোন পণ্য নয়’, ‘দরীদ্র মেধাবীদের শিক্ষার সুযোগ দিন, দিতে হবে’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী শ্লোগান মূলক প্লাকর্ড ফেস্টুন দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শিক্ষাবর্ষে মানবিক, আইন, ব্যবসায় প্রশাসন ও বিজ্ঞান অনুষভূক্ত বিভাগ সমূহে মোট ৩ হাজার দুই শত টাকা থেকে ৫ হাজার ৭ শত টাকার মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা যেত। কিন্তু ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে মানবিক ও আইন অনুষদভূক্ত বিভাগ সমূহে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে মোট ১১ হাজার ৮ শত ১৫ টাকা, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভূক্ত বিভাগ সমূহে মোট ১২ হাজার ৪শত ১৫ টাকা এবং বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত বিভাগ সমূহে মোট ১৩ হাজার ৩ শত ১৫ টাকা লাগবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করেই একবারে তিনগুন ভর্তি ফি বৃদ্ধি করাই গত ১০ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোট এই বর্ধিত ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে গত ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করে।
গত ১২ ডিসেম্বর একই প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে যদি তাদের দাবি না মেনে নেয়া হয়, তাহলে আগামীতে অবস্থান ধর্মঘট পালনসহ গণ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্ধিত ভর্তি ফি কমানোর দাবি না মেনে নেয়ায় আল্টিমেটাম অনুযায়ী রোববার ষষ্ঠদিনের মতো আন্দোলন অব্যহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে বেলা ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে তারা।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হঠাৎ করে ভর্তি ফি তিন গুন বৃদ্ধি করে যে হটকারি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর প্রতিবাদে আমরা ন্যায্য আন্দোলন করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি না মেনে নেয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যহত থাকবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যারয় গুলোর তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফি বেশ কম। ভর্তি ফি উন্নয়ন কমিটির সুপারিশে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তি ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তারা এ আন্দোলন থেকে সরে আসবে।’
খবর৭১/এস: