আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভবন নির্মান বাধা দিতে গেলে পিটিয়ে আহত, পুলিশ ঘটনাস্থালে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি

0
431

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর পৈত্রিক জমি। আদালতের ১৪৪ ধারা জারি সত্ত্বেও দোকানঘর নির্মান করছেন মানিকগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মটুক আলী। সকলের সামনে কাজ করলেও বলার কেউ নেই।বাধা দিতে গিয়ে সোমবার(৬ নভেম্বর) রেনু বেগম নামের এক নারীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে মটুকের স্ত্রী ও কন্যা। পুলিশের প্রত্যক্ষ মদদে জমি দখলের এই খেলা চলছে বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। ৭ নভেম্বর আদালতের নির্দেশনা পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থালে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,নড়াইলের মানিকগঞ্জ বাজারের রাস্তার পার্শ্বে শামুকখোলা মৌজার ৮৩১ খতিয়ানের ১১৯৬/১৬৭৬ দাগের ২০ শতক জমির দলিলের মালিক শামুকখোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী ও তার পরিবারের নামে। শওকত আলী ও পরিবারের অন্যরা চাকুরীর সুবাদে ঢাকাতে অবস্থান করেন। এই সুযোগে ২০১৫ সালের মাঠ জরীপে শামুকখোলা গ্রামের মটুক আলী স্থানীয় এক নায়েবের জোগসাজসে জমির রেকর্ড মটুক আলীর নামে করিয়ে নেন।এর পর থেকে বাজারের ঐ মূল্যবান জমির মালিকানা দাবী করতে থাকেন। এব্যাপারে এলাকায় একাধিকবার শালিশ বৈঠক হলেও পারিবারিক প্রভাব খাটিয়ে জমিতে একাধিক দোকান তোলার কাজ শুরু করের দখলদারী ঐ পরিবার।

গত ২৩ আগষ্ট প্রকাশ্যে দলবল নিয়ে জমির উপরে ভীত দিয়ে কাজ শুরু হয়। এরপর আইনগতভাবে বাধা দিতে থাকে শওকত আলীর পরিবারের লোকেরা। আদালত থেকে ১৪৫ ধারা,পরবর্তীতে ১৪৪ ধারা জারি হলেও নির্মান কাজ থেমে থাকেনি, প্রতিদিন রাতে কয়েকজন মিস্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। ১৩ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারী করা হলেও তা মানছে না দখলকারী মটুকআলী। পুনরায় ৬ নভেম্বর আদালত থেকে আবারও ১৪৪ ধারা জারী করা হয়।

এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শওকত আলী বলেন,গ্রামে আমাদের তেমন কোন লোকজন থাকেনা। সেই সুযোগে মটুক তার লোকজন নিয়ে আমাদের পৈত্রিক জমি দখল করছে,আমরা এলাকায় কোন গন্ডগোল চাই না।জমি নিয়ে মামলা হয়েছে, আদালত যে রায় দিবে আমরা সেই রায় মেনে নেব,কিন্তু কষ্ট হলো আইনকে তোয়াক্কা না করেই পুলিশের সামনে দিয়েই বেআইনী কাজ হয়ে যাচ্ছে।

জমি দখলকারী মটুক আলী অভিযোগ বিষয়ে বলেন,এ জমির রেকর্ড আমার নামে, এটা নায়েব ইউনুস ভালো জানে,আমার জমিতে আমি কাজ করছি।জমির দলিল তার কাছে নেই স্বিকার করে তিনি বলেন,আমি সব জায়গা থেকে অনুমতি নিয়েই কাজ করছি।১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নির্মান কাজ অবৈধ কিনা এই বিষয়ে কোন কথা বলেননি তিনি।
শামুকখোলা গ্রামের কৃষক মিন্টু আলী জানান,এটা শওকত আলীর বাবা আব্দুল মান্নানের জমি। এই জমি জবরদখল করে কখন ও সন্ধ্যা রাতে আবার শেষ রাতে কাজ করান মটুকের পরিবার।

একাধিকবার আদালতের তারিখ উপেক্ষা এবং ১৪৪ ধারা জারির তোয়াক্কা না করেই কয়েকতালা ভিত দিয়ে দোকান ভবন নির্মানের কাজ করে যাচ্ছেন এলাকার ভূমিখেকো মটুক আলী।

সর্বশেষ ০৬ নভেম্বর সকালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাজ না করার জন্য মটুক আলীর বাড়ি যান এলাকার লিটু আলীর স্ত্রী রেনু বেগম।কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মটুক আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম এবং তার কন্যা আসমা রেনুবেগমকে মারধোর করে। এবপর্যায়ে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে আহত হয় রেনু বেগম। বর্তমানে সে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মানিকগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দখলকারী মুটুক আলী তাদের বলে আমি ওসি, এসপি সব ম্যানেজ করেই কাজ করছি।লোহাগড়া থানার সাবেক ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন ও কয়েকজন কর্মকর্তা মটুক আলীকে টাকার বিনিময়ে সহায়তা করেছে। কাজ বন্ধ করার জন্য পুলিশ আসলে মিস্ত্রীরা সরে যায়,পুলিশ কিছুক্ষন পরে চলে যায়।এভাবে মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর পৈত্রিক জমি একসময় দখল হয়ে যাবে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদক উজ্জ্বল রায়কে জানান, মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর পৈত্রিক জমি দখল করে ভবন নির্মান হচ্ছে এটা শুনেছি,আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি।আগের ওসি কি করেছে সেটা আমি জানিনা।মঙ্গলবার (৬নভেম্বর)আমার কাছে আদালতের ১৪৪ ধারা নোটিশ এসেছে,আমি যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here