মো: হুমায়ুন কবির, জগন্নাথপুর:-
আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে ১যুগেরও বেশি সময় ধরে স্থগিত থাকা জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদ সহ সারা দেশের ২শ ১০টি পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে স্থগিত থাকা ২শ ১০টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পৌরসভা ৩৫টি ও ১শ ৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। নির্বাচন না হওয়ায় ১শ ৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৩টিতে গত ২০ বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। ৪০টির নির্বাচন হয়েছে ২০০৩ সালে। বাকিগুলোর নির্বাচন হয়েছে ২০১১ সালে। এর বাইরে কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে, যেগুলো নবগঠিত। নির্বাচন না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চআদালতে মামলা রয়েছে। ইউপির মতো কয়েকটি পৌর সভায়ও ১০/১২ বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। কর্মকর্তারা জানান, কতিপয় সুবিধাভোগী জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, যারা নিজের পদ আঁকড়ে রাখতে ‘যৌক্তিক’-‘অযৌক্তিক’ কারণে মামলা দিয়ে বছরের পর বছর নির্বাচন আটকে রাখেন। ফলে নির্বাচন না হওয়ায় তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকার সুযোগ পান। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৩৬টি জেলার ৭৪টি উপজেলার ১৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ভোট হচ্ছে না। মঙ্গলবার কমিশন সচিবালয়ে আন্ত: মন্ত্রনালয় সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বছরের পর বছর ঝুলে থাকা ২শ ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় নির্বাচনের বাধা দূর করতে ৩টি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইলেকশন কমিশন (ইসি)। সিদ্ধান্তগুলো হলো ভোটার তালিকা জনিত সমস্যায় যে সব ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় ভোট গ্রহন আটকে আছে সে গুলোতে আসামী ৩০দিনের মধ্যে ভোটার তালিকা পুন:বিন্যাস করবেন ইসির কর্মকর্তারা। যেগুলোতে পুন: নির্ধারন সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তা সমাধানে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হবে। যে গুলোতে মামলা বা আদালতের স্থগিতাদেশ ও রুল রয়েছে তা নিস্পত্তি করতে অ্যাটনি জেনারেল অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্যোগ নিবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বৈঠকে ডেপুটি অ্যাটনি জেনারেল, স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন যুগ্ম সচিববের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল এবং ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, ১শ ৭৫টি ইউপি ও ৩৫টি পৌরসভার নির্বাচন পেন্ডিং রয়েছে। বৈঠকে অংশ নেয়া একজন কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, বৈঠকে নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ৩৫টি পৌরসভার মধ্যে ১৪টি এবং ১শ ৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৪৩টিতে কোন ধরনের মামলা বা সীমানা নির্ধারন সংক্রান্ত জটিলতা নেই। এসব ইউপি ও পৌরসভায় যে সব জটিলতা ছিল তা ইতোমধ্যে নিরসন হয়ে গেছে। সেগুলোতে দ্রুত ভোটার তালিকতা তৈরীর জন্য বলা হয়েছে। তালিকা তৈরী হলেই এসব ইউপি ও পৌরসভায় ভোট গ্রহনের প্রদক্ষেপ নেয়া হবে। যে সব ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে ভোট হচ্ছে না, সেগুলো হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লারগাঁও, তেতলী ও কামালবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, মাইজগাঁও, ঘিলাছড়া, উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ও উত্তর কুশিয়ারা, বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ও দশঘর, হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ও নুরপুর, পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারি উপজেলার বলরামপুর, দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ ও দেবীডুবা, নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার ইটখোলা, কুন্দুপুকুর, টুপামারী ও খোকশাবাড়ী, ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী, দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার আজিমপুর, ফারাক্কাবাদ, বিরল ও রাজারামপুর, পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ও পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, পলাশবাড়ী উপজেলার বারিশাল, কিশোরগাড়ী ও পলাশবাড়ী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর। রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা, গড়গড়ী, মনিগ্রাম ও পাকুড়িয়া, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর, ভালুকগাছী ও শিলমাড়িয়া, পবা উপজেলার হরিয়ান,নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ী ও মাঝগাঁও, কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার জিয়ারখী ও কাঞ্চনপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলি, সদর উপজেলার শংকর চন্দ্র, মাখালডাঙ্গা, তিতুদহ, গড়াইটুটি, বেগমপুর ও নেহালপুর, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর মদনা, হাউলি কেডিকে ও মনোহরপুর, যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপল, ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার সুরাট ও পাগলাকানাই, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার মদনপুরা, নাজিরপুর তাতেরকাঠী, দাসপাড়া ও বাউফল, দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী, রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবী, সদর উপজেলার লাউকাঠি, মৌকরণ, কমলাপুর, ইটবাড়িয়া, জৈনকাঠী ও কালিকাপুর, পিরোজপুর জেলার ভাঙ্গারিয়া উপজেলার নদমুলা শিয়ালকাঠী, মঠবাড়িয়া উপজেলার মঠবাড়িয়া, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর, নীলকমল, আহম্মদপুর, নুরাবাদ, জিন্নাগড়, আমিনাবাদ, ওমরপুর ও মুজিবনগর, লালমোহন উপজেলার চরভূতা ও কালমা, তজুমুদ্দিন উপজেলার বড়মলংচড়া ও সোনাপুর, বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আমতলী, ঝালকাঠী উপজেলার সদর উপজেলার পোনাবালিয়া, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার বাসাইল, কালিহাতি উপজেলার বাংড়া, বীর বাসিন্দা ও পারখী, ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া, রসুলপুর, সন্ধানপুর, সাগরদিঘী, লখিন্দর ও সংগ্রামপুর, জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বকশীগঞ্জ ও বাট্টাজোড়, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার বেতাগৈর, মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও, ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার রাইপাড়া ও সুতারপাড়া, নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার নুরালাপুর ও মহিষাসুরা, শিবপুর উপজেলার চক্রধা ও মাছিমপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ফতুল্লা, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার শ্রীফলতলী, মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার রাজৈর, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার নওডোবা ও কুলেরচর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা, গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর, নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর, ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর, চর মাধবদিয়া, নর্থ চ্যানেল, আলিয়াবাদ, ডিক্রিচর, মাচ্চর, অম্বিকাপুর, কৃষ্ণনগর, কানাইপুর, কৈজুরী ও গেরদা, আলফাডাঙ্গা উপজেলার আলফাডাঙ্গা, গোপালপুর ও বুড়াইচ, মধুখালী উপজেলার নওপাড়া, বোয়ালমারী উপজেলার চাঁদপুর, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া, কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার খোসবাস (দ.), শিলমুড়ী (দ.), শিলমুড়ী (উ.), সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিমারা (উ.), গলিমারা (দ.), মুরাদনগর উপজেলার মুরাদনগর, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ গ্রাম, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ (দ.), সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর, নোয়াখালী হতিয়া উপজেলার হরণী, চান্দী, সুখচর ও নলচিয়া, সদর উপজেলার নোয়ান্নই, লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার দালালবাজার, দক্ষিণ হামছাদি, চর রুহিতা, ভাঙ্গা খাঁ ও লোহারকান্দি, রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার, কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ও সাহেবের হাট, চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার কধুলখীল ও পশ্চিম গোমদন্ডী, ফটিকছড়ি উপজেলার খিরাম, দৌলতপুর ও সুয়াবিল, মিরেরসরাই উপজেলার করেরহাট, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোছনাবাদ, মরিয়মনগর, ও স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া, উড়িরচর, আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী, চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী ও সাতকানিয়া এবং খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যছলা। যেসব পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে না সেগুলো হলো বোদা (পঞ্চগড়), দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়), সেতাবগঞ্জ (দিনাজপুর), বিরল (দিনাজপুর), নীলফামারী, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা), বাগাতিপাড়া (নাটোর), বনপাড়া (নাটোর), পার্বতীপুর (দিনাজপুর), বাঘা (রাজশাহী), পাঁচবিবি (জয়পুরহাট), ধামইরহাট (নওগাঁ), ঝিনাইদহ, বেনাপোল (যশোর), ঝিকরগাছা (যশোর), মংলা পোর্ট (বাগেরহাট), মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর), লালমোহন (ভোলা), পটুয়াখালী, বাউফল (পটুয়াখালী),আমতলী (বরগুনা), হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ), বকশীগঞ্জ (জামালপুর), কালিয়াকৈর (গাজীপুর), দোহার (ঢাকা), আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) গোসাইরহাট (শরিয়তপুর), কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ), শিবপুর (নরসিংদী), আজমীরিগঞ্জ (হবিগঞ্জ), শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), দেবিদ্বার (কুমিল্লা), নারায়ণপুর (চাঁদপুর), হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) ও নাজিরহাট (চট্টগ্রাম)।
খবর ৭১/ ই: