ফারুক ইফতেখার সুমন, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সবুজ মিয়াকে হত্যার পর সুটকেসে ভরে লাশ ফেলে দেওয়া হয় ফুলবাড়িয়ার দেওখোলা এলাকায়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকা-টির রহস্য উদ্ঘাটির হয়েছে। হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এদিকে সবুজ মিয়াকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা মধুপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
উপজেলার মধুপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে নারী পুরুষ ছাড়াও নিহত সবুজের বৃদ্ধা মা রফিকুন্নেছা (৮০), স্ত্রী রেহেনা আক্তার, দুই সন্তান মৃদুল (৮) ও টুটুল (৩) এবং ভাই-বোনেরা উপস্থিত ছিলেন। নিহত সবুজ মিয়ার বাড়ি উপজেলার নাউরি গ্রামে। গত ২১ সেপ্টেম্বর তিনি নিখোঁজ হন। কোথাও খোঁজ করে না পেয়ে দুইদিন পর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় জিডির পর খোঁজ করে সন্ধান পাওয়া যায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া এলাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ব্রিফকেসের মধ্যে পাওয়া গেছে। এই অবস্থায় নিখোঁজ হওয়া ব্যবসায়ী সবুজের স্ত্রী মোছা. রেহেনা আক্তার (২৮) সনাক্ত করে এটাই তাঁর স্বামীর লাশ। তবে ওই সময় লাশের আরেকজন দাবিদার থাকায় রেহেনাকে স্বামীর লাশ না দিয়ে আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করে পুলিশ। পরে অবশ্য অন্য দাবিদার তাঁদের নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির লাশ পান ঢাকার একটি হাসপাতালের মর্গে। দীর্ঘ ১২ দিনেও হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও লাশ না পেয়ে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। সেখানে হাজারো লোকজনের সামনে মাইক হাতে নিয়ে সবুজ মিয়ার হত্যাকারীদের বিচার ও লাশ ফেরত চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের লোকজন। এসময় তারা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান।
নিহত ব্যবসায়ী সবুজের স্ত্রী রেহেনা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী সবুজ টাকা লগ্নির ব্যবসা ও এলাকায় সালিস-দরবার করতেন। লগ্নি করা ১৩ লাখ টাকা ফেরৎ আনার জন্যে সবুজ মিয়া গত ২১ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে অবস্থানকারী তাসলিমা আক্তারের লাভলীর বাসায় যান। লাভলীও তাঁর গ্রামের বাসিন্দা। এরপর থেকে সবুজের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সবুজের ছোট ভাই মোনায়েম মিয়া ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। পরবর্তিতে লাশের সন্ধান পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ একটি নিয়মিত মামলা রুজু করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করেন। তাঁরা ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযানে নেমে মূল সন্দেহভাজন তাসলিমা আক্তার লাভলী সহ ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ লাভলীকে আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধী দেন বলে ডিবি পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান জানান।
ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি’র) ওসি মো. আশিকুর রহমান জানান, ডিএনও রিপোর্ট পাওয়ার পর লাশটি সবুজ মিয়ার কি না তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিক ভাবে লাশটি সবুজের বলেই স্বজনরা শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় আটক নারী লাভলী আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে সুস্থ্য হওয়ার পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
খবর৭১/এস;