শতাব্দীর মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬০০ ছাড়িয়েছে। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে নিহত হয়েছেন ১৬৪৪ জন। এতে আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০৮ জন আর নিখোঁজ রয়েছেন ১৩৯ জন।
শনিবার (২৯ মার্স) দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ ও গবেষণা সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মিয়ানমারের মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর বাইরে যে পরিমাণ আর্থিক, পরিবেশগত এবং সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক মূল্যে তার পরিমাণ ছাড়াতে পারে ১ হাজার কোটি ডলার।
এর আগে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে জরুরি বিভাগের বাইরে আহতদের সারি দেখা যায়। আহতদের অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে গাড়ি এবং পিকআপে করে এসেছেন। পরবর্তীতে তাদের স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। যাদের গায়ে ধুলো ও রক্ত মাখা ছিল।
ভূমিকম্পে হাসপাতালও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগটিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হাসপাতালে প্রবেশপথে একটি গাড়ি চাপা পড়েছে।
এএফপিকে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, ‘অনেক আহত মানুষ আসছেন। আমি এর আগে এমন কিছু দেখিনি। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি খুব ক্লান্ত।’
এদিকে, আহতদের দেখতে মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৮ মার্চ) নেপিদো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে সাগাইংয়ের উত্তর-পশ্চিমে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৭ এবং এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় সংঘটিত হয়েছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়ের ১৭ কিলোমিটার দূরে।
মান্দালয় শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এটি মিয়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির কেন্দ্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা ও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে এদিন দেশটির বহু ভবন, সেতু ও রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।