গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে অবরুদ্ধ জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইসরায়েলে। গতকাল বুধবার রাজধানী জেরুজালেমে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
ইসরায়েলের নেতানিয়াহুবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছিল এই বিক্ষোভের আয়োজক। সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর উদ্দেশে ‘আপনি সরকারপ্রধান, আপনিই দায়ী’, ‘আপনার হাতে রক্ত লেগে আছে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৬৭ বছর বয়সী নেহামা ক্রিসলার এএফপিকে বলেন, “আমরা শুধু তাকে (নেতানিয়াহু) স্মরণ করিয়ে দিতে এসেছি যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জিম্মিদের মুক্তি।”প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জেরুজালেমে বিগত বেশ কয়েক মাসের হিসেবে গতকালের বিক্ষোভ ছিল সবচেয়ে বড়।
মাত্র ৩ দিন আগে ভয়াবহ বিমান হামলার পর এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বুধবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে একটি নিরাপত্তা পরিধির সম্প্রসারণ এবং একটি আংশিক মুক্তাঞ্চল (বাফার জোন) তৈরি করতে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযানে নির্দিষ্ট স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।”
গাজায় অবরুদ্ধ ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই সোমবার সেখানে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। এতে নিহত হয়েছেন ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল দেড় শতাধিক।
ব্যাপক এই হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা চলছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। এই সমালোচনার মধ্যেই গাজায় স্থল অভিযান শুরু করল আইডিএফ।
বুধবার রাতে গাজার বাসিন্দাদের ‘শেষবার সতর্ক করে’ একটি ভিডিওবার্তা দেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। ভিডিওবার্তায় কাৎজ বলেন, “গাজাবাসীদের বলছি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উপদেশ মেনে জিম্মিদের মুক্তি দিন এবং হামাসকে উচ্ছেদ করুন। যদি আপনারা এই উপদেশ মানেন, কেবল তাহলেই বেঁচে থাকার অন্যান্য বিকল্প আপনাদের সামনে উন্মুক্ত হবে।”
এদিকে আইডিএফ স্থল অভিযান শুরুর পর মধ্য ও দক্ষিণ গাজার ফিলিস্তিনিরা দলে দলে উত্তর গাজার দিকে যাওয়া শুরেু করেছেন। আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের গাজা শাখার দপ্তরটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায়। রেডক্রস গাজা শাখার জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা ফ্রেড ওলা সাংবাদিকদের জানান, গত দু’মাস গাজায় যে আপাত শান্ত পরিস্থিতি ছিল— তা ফের নষ্ট করেছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযান।
“আমরা এখন বাতাসে ভীতির উপস্থিতি অনুভব করছে পারছিৃ এবং যাদের আমরা সহযোগিতা করছি, সেই তাদের তীব্র ভীতি এবং বিধ্বস্ত অবস্থাও খুব ভালোভাবে আমাদের নজরে আসছে।