খালেদা জিয়া দুর্নীতি করেননি, অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছে: আদালত

0
29

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে তাকে নাইকো দুর্নীতি মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। ওই মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি ও অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নাইকো দুর্নীতি মামলায় আসামি করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কোনো দুর্নীতি করেননি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালত নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ আটজনকে খালাস দিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে মৌখিকভাবে এসব কথা বলেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়েই নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করা হয়। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে আন্তর্জাতিক সেই চুক্তি বলবৎ রাখেন। এক এগারো সরকার এসে নাইকোর দুর্নীতির ঘটনায় শেখ হাসিনার নামে একটি মামলা দায়ের করে। পরে খালেদা জিয়ার নামেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে তার মামলাটি উচ্চ আদালত থেকে খালাস করে নেন। পরবর্তীতে একই মামলায় বেগম খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য আসামিদেরকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার লক্ষ্যে মামলাটি চলমান রাখেন। খালেদা জিয়া কোনো দুর্নীতি করেনি। এমনকি তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি।
বিচারক বলেন, এ মামলায় সেলিম ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে পিটিয়ে জোর করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়। সে কারণে এই ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ট্রু বলার সুযোগ নাই। এর উদ্দেশ্য হলো গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের জড়িত করার জন্য জোরপূর্বক এই জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বুঝা যায়, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করে এই মামলা করা হয়েছে। তাই সকল আসামিকে বেকসুর খালাসের রায় ঘোষণা করা হলো।

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য আজ রায়ের দিন ধার্য করেন। আসামিরা আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম হাজিরা দেন।
এরপর দুদকের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। তারা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেন। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে তারা খালাসের প্রার্থনা করেন।
২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে দুদক। দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here