‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে উত্তাল নদীর পাড়

0
46

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তরের ১১টি স্থানে অভিনব প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে মুখর তিস্তা নদীর পাড়, যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচিতে। আন্দোলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরাও যুক্ত হয়েছেন।

‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’—এই স্লোগানে প্রকম্পিত তিস্তার দুই তীর। শুকিয়ে যাওয়া তিস্তায় জেগে ওঠা চরে জড়ো হয়েছেন উত্তরবঙ্গের হাজারো মানুষ। কেউ হেঁটে, কেউবা নৌপথে এসে মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। তিস্তা ব্রিজের নিচে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ সমাবেশ।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় তিস্তার পানির প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, আর এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তারা দাবি করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পেয়ে হাজার হাজার কৃষক ও সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
১১ জেলায় একযোগে প্রতিবাদ

লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের ১১টি স্থানে একযোগে এই দুদিনব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। তিস্তার ২৪২ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ অববাহিকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পদযাত্রা।

এই প্রতিবাদে সম্পৃক্ত মানুষের অভিযোগ, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে লাখ লাখ মানুষকে দুর্দশার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা বলছেন, ‘ভারতের আগ্রাসন রুখতে এখনই আমাদের সোচ্চার হতে হবে, নইলে ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’

আন্দোলনে আসা একজন বলেন, ‘শুকনা মৌসুমে আমরা ন্যায্য পানি পাচ্ছি না।’ আরেকজন বলেন, ‘যখন আমাদের পানি প্রয়োজন হয় না তখন ইন্ডিয়া আমাদের পানি দিয়ে প্লাবিত করে দেয়।’

আন্দোলনে আসার কারণ জানিয়ে একজন বলেন, ‘আন্দোলন করার একটাই উদ্দেশ্য হলো, আমাদের পানির দরকার।’
বিএনপি নেতাদের সংহতি

দুপুর ২টায় তিস্তা পাড়ের প্রধান সমাবেশে উপস্থিত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া, আন্দোলনের অন্যান্য স্থানে বিএনপির নেতারাসহ একদফা আন্দোলনের শরিক রাজনৈতিক নেতারাও সংহতি প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ

এই আন্দোলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলে তিস্তা নদীর সংকট তুলে ধরা এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই আয়োজকদের অন্যতম লক্ষ্য। আয়োজকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা গেলে ভারত ন্যায্য হিস্যা দিতে বাধ্য হবে এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here