নতুন বাংলাদেশে নতুন আঙ্গিকে বসছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবার মেলায় থাকছে অনেক নতুনত্ব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পাওয়া নতুন বাংলাদেশকে তুলে ধরতে থাকবে বিশেষ প্যাভিলিয়ন। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের টিকিট কাটা ও যাতায়াতে এবার বিশেষ ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শুরু হবে এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৫। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারেই বসবে মেলা।
দেশ-বিদেশ মিলে থাকবে ৩৬২ স্টল
ইপিবি জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবার সাতটি দেশ মেলায় অংশগ্রহণ করবে। এতে মোট ১১টি প্যাভেলিয়নে দেশ-বিদেশ মিলে ৩৬২টি স্টল থাকবে।
কিউআর কোড স্ক্যান করে মেলায় প্রবেশ
জানা গেছে, এবারের মেলায় নতুনত্ব থাকছে। এর মধ্যে- মেলায় প্রবেশের টিকিট কেনা যাবে অনলাইনে। পরে অনলাইনে দেওয়া কিউআর কোড মেলা গেটে স্ক্যান করে প্রবেশ করা যাবে।
মেলায় থাকবে গণঅভ্যুত্থানের দুই প্যাভিলিয়ন
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে মেলায় দুটি প্যাভিলিয়ন থাকবে। সেখানে তুলে ধরা হবে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ভূমিকা ও আকাঙ্ক্ষা। এতে সাধারণ মানুষ গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতে পারবেন।এবার অনলাইনে টিকিট কেনা যাবে। টিকিট কিনতে নগদ, বিকাশসহ অনলাইন গেটওয়েগুলো ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া অনলাইনে টিকিট কাটার পর একটি কিউআর কোড দেওয়া হবে। মেলার গেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করা যাবেযুগ্ম সচিব মাহমুদুল হাসান
ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো যুক্ত হচ্ছে উবার সার্ভিস
প্রতিবার বাণিজ্য মেলায় বিআরটিসি বাস সার্ভিস থাকলেও এবার এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে উবার সেবা। কনসেশন রেটে উবারে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা। মেলার সবগুলো পয়েন্ট থেকে উবার সার্ভিস দেবে। পাশাপাশি প্রতিবারের মতো এবারও বিআরটিসির ২০০টির বেশি বাস থাকবে।
বিদেশিদের সুবিধার্থে থাকবে সোর্সিং কর্নার
এবার বাণিজ্য মেলায় থাকবে সোর্সিং কর্নার। সেখানে গার্মেন্টস ও লেদারসহ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান এক্সপোর্ট আইটেমগুলো প্রদর্শন করা হবে। এই সোর্সিং পয়েন্টের মাধ্যমে বিদেশিরা বাংলাদেশের এক্সপোর্ট আইটেমগুলোর বিষয়ে জানতে পারবেন। এছাড়া প্রত্যেক সপ্তাহে এক্সপোর্ট পণ্যের উপর একটি করে সেমিনার থাকবে।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার মেলায় পরিচ্ছন্নতার জন্য দুটি টিম কাজ করবে। এছাড়া পরিচ্ছন্নতায় সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার অনলাইনে টিকিট কেনা যাবে। একটি টেক কোম্পানিকে টিকিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের কাজ দিয়েছি। এই কোম্পানি বাণিজ্য মেলায় প্রবেশের জন্য আলাদা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করবে। টিকিট কিনতে নগদ, বিকাশসহ অনলাইন গেটওয়েগুলো ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া অনলাইনে টিকিট কাটার পর একটি কিউআর কোড দেওয়া হবে। মেলার গেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করা যাবে।
তিনি বলেন, এবার মেলায় থাকবে জুলাই চত্বর। সেখানে তুলে ধরা হবে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ভূমিকা ও আকাঙ্ক্ষা। সাধারণ মানুষ গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতে পারবেন।
দেশীয় পণ্যের প্রচার-প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত মেলা হয়েছে আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা বসেনি। এরপর ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলে বসছে এ আন্তর্জাতিক মেলা।