সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। বুধবারও (৩ জুলাই) শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এদিন আন্দোলন হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে কি না, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এজন্য সবার চোখ উচ্চ আদালতের দিকে। সেখান থেকে কী রায় আসে সেটা জানার অপেক্ষা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকেও কোটা পুনর্বহালের রায় এলে তাদের আন্দোলন আরও জোরালো হবে। আগামীকাল বেলা ১১টায় আবারও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।
কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি। আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কোটা পুনর্বহালের রায় দেবে। তাই আমরা আগামীকাল বেলা ১১টায় আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করব। এ সময় আমরা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে অবস্থান গ্রহণ করব। যদি রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায় তাহলে আমরা নতুন করে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হব।
২০১৮ সালে চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করতে বাধ্য হয়। ওই বছরের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে বিপত্তি বাধে গত ৫ জুনের হাইকোর্টের একটি আদেশে। সেই আদেশে ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটি বাতিল করেন হাইকোর্ট। এরপর আবারো ফুঁসে উঠেন ছাত্ররা। চার দফা দাবিতে তারা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
সে দিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে না কি বাতিল হবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।