পেনশন নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার (১ জুলাই) থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, সরকারের কারও পক্ষ থেকে আলোচনার কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তাঁরা আলোচনায় প্রস্তুত এবং দ্রুত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া শুরু করতে চান। কিন্তু দাবির সুরাহা না হলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাঁদের উপায় থাকবে না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে। সরকার বলছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪০০টির মতো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয় কর্মসূচির আওতায় পেনশন দেওয়া হবে।
কর্মসূচিটি ১ জুলাই থেকে চালু হয়েছে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বলছে, নতুন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের সুবিধা কমবে। ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক ও তাঁদের অবমাননাকর। তাঁরা নতুনদের জন্য এই আন্দোলন করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের দাবি তিনটি—প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে (প্রশাসনে জ্যেষ্ঠ সচিবেরা যে ধাপে বেতন-ভাতা পান) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি শুধু প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, আলোচনার প্রস্তাব দূরে থাক, কেউ একটা ফোন করে জানতে চাননি কেমন আছি। কার্যক্রমে থাকা ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দেশে এখন কার্যক্রমে থাকা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫টি। সেখানে শিক্ষক রয়েছেন ১৬ হাজারের কিছু বেশি। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৩৪ হাজারের মতো।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ। কিন্তু কেউ আলোচনার কথা বলছে না। তিনি বলেন, ‘কারও কি শুভবুদ্ধির উদয় হবে না!’