বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে দূর্বৃত্ত সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজরা। নৈরাজ্যের কালো ছায়া যেন সারা বাংলাদেশকেই ঢেকে ফেলেছে। ঈদের আনন্দ উৎসবকেও বাকশালীকরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন অদম্য জমিদার হয়ে উঠেছে। দেশের কোথাও কোনো সুস্থ প্রতিযোগিতার জায়গা নেই। ক্ষমতাসীনরা সবকিছু তাদের করায়াত্ব করার জন্য চোখ রাঙিয়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্তানরাও নিজেদের জমিদার সন্তান ভাবছেন। তারা মনে করেন আইন যেন তাদের হাতের মুঠোয়। ঈদের দিন রাতে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সাথে একটি বাইকের ধাক্কা লাগায় দুইজন বাইক আরোহীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতার লোকজনরা কূপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ঈদের দিন মানুষ হত্যার উন্মাদনার মধ্য দিয়েই আওয়ামী ক্যাডাররা উৎসব পালন করছে।
বন্যা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে যেন বন্যা ও ধ্বংস সমার্থক হয়ে উঠেছে। পাহাড়ি ঢল ও মেঘ-ভাঙা বৃষ্টিপাতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে বন্যা ধ্বংসের তান্ডব চালাচ্ছে। বহু মানুষ বসতবাড়ি, ক্ষেতখামার প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কাছারি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও ক্ষেতের ফসল। সিলেটে জলধারাবর্ষণে মনে হয় যেন পৃথিবী ভেসে যাচ্ছে। প্রতিবছর বারবার বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচন্ড তান্ডবে সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর। দেশের ভেতরের বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে দিশেহারা মানুষ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছে না। ঘরের ভেতর উঁচু মাচা করার পরেও টিকতে পারছে না।
তিনি বলেন, উত্তরপূর্বাঞ্চলের রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অবস্থাও মারাত্মক সঙ্গীন। উজানের প্রবল ঢলে সিলেট ও রংপুর বিভাগে নদীগুলো উপচে দুই পাশে প্রবল বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। লক্ষ-লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সরকারের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে আজ বন্যাউপদ্রুত মানুষদের। বিশেষজ্ঞদের অভিমত সিলেটের হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকান্ড। নদীতে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক গতি প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করার কারণেই বন্যার প্রকপ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার।