ঢাকা শহর কৃত্রিম এক মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বোতলজাত সুপেয় খাবার পানি, স্যালাইন ও হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ঢাকা শহর আজকে ইট-পাথরের শহরে পরিণত হয়েছে। আজকে গাছ ও ঘাস দেখা যায় না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো-ঢাকা শহর কৃত্রিম একটি মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ঢাকা শহরে জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে গেছে। ভূমিদস্যুরা জলাশয়গুলো দখল করে ফেলেছে। এই ভূমিদস্যু কারা? এরা সরকারের মদদপুষ্ট। সরকার তাদের প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। তলে তলে ওদের সঙ্গে সরকারের একটা ব্যবস্থা আছে।’
হিট অফিসারকে উদ্দেশ্য করে আব্বাস বলেন, ‘দেশে হিট অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আমাদের মেয়ের মতো। আমি তাঁকে বলতে চাই, আপনি সরকারকে বলুন-ঢাকা শহরের চারদিকের খালগুলো খুলে দিতে। আপনি সরকারকে বলুন, কৃত্রিম বালি দিয়ে ঢাকা শহরকে যে মরুকরণ করা হয়েছে, এটাকে অপসারণ করতে। আপনি বলুন, সরকারের সঙ্গে যে সমস্ত ভূমিদস্যুদের আঁতাত রয়েছে, তাদের সঙ্গে আঁতাত ভেঙে সেগুলো ফেরত দিতে। তাহলে ঢাকা শহর রক্ষা পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ঋতু আজ উধাও হয়ে গেছে। এখনকার মানুষজনও বলতে পারে না বাংলাদেশে কয়টি ঋতু। আর ঢাকা শহরবাসী তো ঋতু চোখেও দেখে না, অনুভবও করে না। কারণটা কী? ধীরে ধীরে বাংলাদেশটা একটা মরুকরণ প্রক্রিয়ার চলে যাচ্ছে। তার একটিমাত্র কারণ, অবৈধ সরকার, নতজানু সরকার এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতি।’
আব্বাস বলেন, ‘আজকে ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মায় পানি নাই, তিস্তা ব্যারেজের কারণে তিস্তায় পানি নাই। বাংলাদেশে ১১ শ’র বেশি নদী ছিল। তার মধ্যে ৩০০ নদী ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে নিখোঁজ হয়ে গেছে। এই নদী আর নাই!’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। রাজনীতির ছোট একটা অংশ হলো সমাজকল্যাণ। আমি এক সময় ঢাকা শহরের মেয়র ছিলাম। সারা বাংলাদেশে আজকে তীব্র দাবদাহ প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকা শহর তার ব্যতিক্রম নয়। আগে বাংলাদেশের সব জায়গায় যা কিছু হোক না কেন, ঢাকা শহরটা একটু সেফ থাকত। আজকে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের অবস্থাটা কী? এই দাবদাহ বাংলাদেশে কখনো ছিল না।’
জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।