সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত চলছেই। ওপার থেকে আবারও ভেসে আসছে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ।
এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা। মাঝে পাঁচ দিন রাখাইনের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। গত বৃহস্পতিবার থেকে সীমান্তে আবারও বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বদিকে মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওইসব এলাকায় নতুন করে সংঘাত ছড়িয়েছে। সীমান্তের এসব এলাকায় শনিবার ভোররাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে।
সাবরাং ইউনিয়ন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী, ঝিমংখালী, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, টেকনাফ সদরের আলীখালি, লেদা, মুচনী, জাদীমুড়া, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া, জালিয়াপাড়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, আওয়াজের কারণে ঘুমাইতে পারি না। ক্ষেতে কাজ করতে গেলে ভয়ে ভয়ে কাজ করি। কোন সময় যেন এসে গায়ে লাগে।
টেকনাফের নাজির পাড়ার বাসিন্দা ইজিবাইক চালক রফিক উদ্দিন বলেন, আজ ভোরে ইজিবাইক চালাতে বের হয়ে চমকে উঠি। মনে হচ্ছে ভূমিকম্পে সব উল্টে যাচ্ছে।
টেকনাফ সদরের জালিয়াপাড়ার রহমতুল্লাহ নামের এক বাসিন্দা বলেন, ঘুমের শিশু উঠে যাচ্ছে মিয়ানমারের গুলির শব্দে। শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. খোরশেদ আলম বলেন, গোলাগুলির শব্দ কয়েক দিন তেমন শোনা না গেলেও এখন আবার থেমে থেমে বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে মিয়ানমারে দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। মনে হচ্ছে তাদের সংঘাত আরও বেড়েছে।
টেকনাফের বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমাদের বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে কাজ করছে। আর কোনো রোহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না।