একদিন শান্ত থাকলেও শনিবার (১০ ফ্রেবুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং-এর উনছিপ্রাং সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ থেমে থেমে শোনা গেছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরের অনবরত হামলায় সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
উনছিপ্রাং সীমান্তের স্থানীয়রা জানান, ওপারে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিগুলো দখল করার পর আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহীরা টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের শহর শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী দখলে নিতে এই হামলা করছে।
উনছিপ্রাং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রশিদ আহমদ বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ এখনো ভেসে আসছে। সীমান্তের কাছাকাছি যারা চিংড়ি চাষিদের নিরাপদ স্থানে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইক্ষং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, সকাল থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা গৃহযুদ্ধের গুলাগুলির বিকট শব্দ শুনা যাচ্ছে। স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। হয়তো উনছিপ্রাং সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের শহর কুমিরখালী দখল নিতে এই হামলা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত গুলাগুলি হয়েছিল। দিনে কিছুটা শান্ত ছিল। আজ শনিবার সকাল থেকে নতুন করে আবারো গুলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে টেকনাফের উনছিপ্রাং সীমান্তে গোলাগুলির বিকট শব্দ শোনা গেছে। সারাদিন গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর সন্ধ্যা থেকে ফের ৩০/৩৫ রাউন্ড গোলাগুলি হয়েছিল । সেখানে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে এসব সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এপারের স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও অন্যান্য সংস্থার ৩ শতাধিক সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। মিয়ানমারের এসব নিরাপত্তাকর্মীদের দ্রুত মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ প্রশাসন।