জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির পদধারীদের একটি বড় অংশের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। এমনকি মাস্টার্সে অকৃতকার্য হওয়ার অছাত্রদের সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন কমিটির সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক। এরপরও বিশেষ ছাত্রত্ব দেখিয়ে রাজনতি করেছেন তারা। তার ওপর সংগঠনের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কমিটিতে রাখা হয়েছে ৪০০ জনের ওপরে নেতাকর্মীকে। এদের মধ্যে বর্তমানে ২৮০ জনের ওপরে ছাত্রত্ব নেই। যেই ১২০ জনের ছাত্রত্ব আছে তাদের অনেকেই বিশেষ ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী- একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী সবোর্চ্চ ৬ বছরে স্নাতক ও ২ বছরে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আট বছরে পড়াশোনা শেষ করতে না পারলে ভিসি বিশেষ বিবেচনায় পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটিই কাজে লাগায় ছাত্রলীগ। তখন তিনি আর নিয়মিত ছাত্র হিসেবে বিবেচিত হবেন না।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের তথ্য মতে, ৪৬ ব্যাচের কয়েকটি বিভাগ ছাড়া অধিকাংশ বিভাগের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। ৪৭ ব্যাচেরও কয়েকটি বিভাগের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা সমাপ্ত হয়েছে।
বিভাগীয় সূত্র জানা যায়, জাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে ভর্তি হন ২০১২-১৩ সালে। সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন দর্শন বিভাগে ভর্তি হন ২০১৩-২০১৪ ব্যাচে পোষ্য কোটায়। তিনিও মাস্টার্সে ফেল করা শিক্ষার্থীদের তালিকায় রয়েছেন। এতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীর পদ থেকে বাদ পড়েছেন তারা। পোষ্য কোঠায় ভর্তি হলে আবাসিক হলে থাকতে না পারার নিয়ম না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক একাই এক রুম নিয়ে থাকছেন।
২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ৩০ নভেম্বর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী ১২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করার নিয়ম থাকলেও কমিটির সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০০ জনের উপরে।
সম্প্রতি মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের পরে জরুরি এক সিন্ডিকেট সভায় অছাত্রদের ৫ কর্মদিবসের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘ছাত্রলীগের অন্যায়, অপকর্মে জড়িত থাকার সুযোগ নেই। যারা ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিয়ম মান্য করে দ্রুত হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’