বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযান ও মন্ত্রীদের হুঁশিয়ারির পরও নিয়ন্ত্রণহীন চালের বাজার। বাজারে চালের কোনো ঘাটতি না থাকলেও, দাম কমছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ক্ষোভ জানান ক্রেতারা। আর কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
দেশে চলছে আমনের ভরা মৌসুম। কিন্তু সংসদ নির্বাচনের পরেই চালের দাম বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়ানোর এখনো চলছে। এদিকে সরকার চালের দাম তিন-চার দিনের মধ্যে কমানোর ঘোষণা দিলেও তার কিছুই হয়নি। বরাবরের মতো অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে এরইমধ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
যদিও রাজধানীর বাবু বাজার, মোহম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ও কারওয়ান বাজার, কোথাও চালের ঘাটতি নেই। বিভিন্ন কোম্পানির বস্তায় ভরপুর চালের দোকান অথচ প্রতি কেজিতেই বেড়েছে অন্তত ছয় টাকার বেশি।
মিলারদের বরাতে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে এবার আমন চালের উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত চাল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন। ভরা মৌসুমে চালের এভাবে দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারাও।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, সরকারের ব্যর্থতায় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আর আটো রাইস মিল মালিকরাই এখন চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।
লাগামহীন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আর আটো রাইস মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে চালের দাম কমানো সম্ভব নয় বলেই মনে করেন এ কৃষি অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশে মূলত আউশ, আমন ও বোরো-এই তিন জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকে। জুন-জুলাই মাসে অর্থাৎ বর্ষায় আমন ধান বোনা হয় এবং নভেম্বর মাসে বা হেমন্তে সেই ধান কাটা হয়।
অন্যদিকে বোরো ধান শীতকালীন রবিশস্য। আমনের মৌসুম শেষ হবার পরে অর্থাৎ ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই ধানের সময় চলে। বোরো ও আমন ধানের মৌসুমের মাঝে যে সাত মাসের ব্যবধান, এই সময়ে আউশ ধানের ফলন হয়। আউশের মৌসুম মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ ৯০ থেকে ১০০ দিনের মতো থাকে।