যে কোনো আমলের ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা অতীব জরুরি। নিয়ত শুদ্ধ হলে খুব ছোট আমলের প্রতিদানও অধিক পরিমাণে দেবেন আল্লাহতায়ালা। তাই সর্বক্ষেত্রে নিয়ত শুদ্ধ রাখা চাই। হোক সেটা ফরজ কিংবা নফল ইবাদত। বিশুদ্ধ নিয়ত সম্পর্কে কুরআনের বাণী-তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তার ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও জাকাত প্রদান করতে; এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। (সূরা বাইয়িনাহ-৫)।
পরিশুদ্ধ নিয়ত সম্পর্কে হাদিস। হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.)কে আল্লাহর রাসূল (সা.) যখন ইয়ামেনে পাঠান, তখন তিনি বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) আমাকে অসিয়ত করুন। রাসূল (সা.) বললেন, তোমার দ্বীনকে খাঁটি কর; অর্থাৎ নিয়ত শুদ্ধ কর। অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব-১/৩৯)। অন্য হাদিসে হজরত আলক্বামাহ ইব্নু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, আমি ‘উমর ইব্নুল খাত্তাব (রা.)কে মিম্বারের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)কে বলতে শুনেছি, কাজের প্রাপ্য হবে নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোনো মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে-তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্য, সে হিজরত করেছে। (সহিহ বুখারি-১)।
দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা প্রশংসনীয় ও ফজিলতপূর্ণ একটি কাজ। এক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা অতীব জরুরি। আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করলে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাকে কঠিন শাস্তি দেবেন। জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। অনেকে ইলম অর্জন করে আলেম সমাজের সঙ্গে তর্ক করার জন্য। আবার কতকে ইলম অর্জন করে মানুষকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য। এসব হীন উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করলে সেটা নাজাতের কারণ হওয়ার পরিবর্তে জাহান্নামের পথকেই সুগম করবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আলেমদের ওপর বাহাদুরি জাহির করার জন্য, নির্বোধদের সঙ্গে ঝগড়া করার জন্য এবং নিজের দিকে সাধারণ মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট করার জন্য জ্ঞানার্জন করে, আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামে দাখিল করবেন। (ইবনে মাজাহ, ২৬০)।