খবর ৭১: ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্মমভাবে পেটানোর ঘটনায় আলোচনায় আসা ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়েছে। এর আগে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে তাকে পিওএম উত্তর বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছিল।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দফতর তাকে বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আদেশে বলা হয়, ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনি বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বভার অর্পণ করবেন, না হয় ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।
এর আগে ডিএমপির এক আদেশে আলোচিত এই কর্মকর্তাকে পিওএম উত্তর বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নির্দেশে তিন সদস্যের এই কমিটি করা হয়।
কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সভাপতি ডিএমপি সদর দফতরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) এবং দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) রমনা বিভাগ এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ)।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে হারুনের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ নেতারা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ। তাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতারা অভিযোগ করেন, হারুন শনিবার রাতে ৩৩ ব্যাচের আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। নারী কর্মকর্তার স্বামীও একজন ক্যাডার কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এরই জেরে শাহবাগ থানায় ডেকে এনে তাদের নির্মম নির্যাতন করা হয়।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা যে করেছে, সে পুলিশের হোক বা যেই হোক না কেন, অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। কেন করেছে, কী করেছে, আমরা জিজ্ঞাসা করব। তার ভুল কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।
এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে এর আগেও মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকালের ঘটনাটি প্রথম উল্লেখযোগ্যভাবে এসেছে, আমরা একটু দেখে নিই। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সে যতখানি অন্যায় করেছে সেই শাস্তি সে পাবে।
এদিকে দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদও জানান, মারধরের বিষয়টি প্রমাণিত হলে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করা হয়।