খবর ৭১: বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টন, বান কি মুনসহ বিশ্ব বরেণ্য ১৭৫ জন নেতার মধ্যে ১০৪ জন নোবেল বিজয়ী বিবৃতি দিয়েছেন ডক্টর ইউনূসের পক্ষে। বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাপার বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ডক্টর মোঃ ইউনূসের বিচার চলছে। আমাদের এ প্রসঙ্গে কথা নেই। বিশ্ব বরেণ্য এত নেতা একটি বিষয়ে কোন বিবৃতি দিয়েছেন, এটা আমার জানা নেই। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের বক্তব্যে, বিচার বিভাগীয় হয়রানীর অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাদের বিচার-বুদ্ধি বা সততা সম্পর্কে কোন সন্দেহ বা কটাক্ষ করা হাস্যকর। তারা বিচার বিভাগীয় হয়রানির কথা বলেছেন, এটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখতে হবে। না হলে বিশ্ব সমাজে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে। এজন্য হয়তো, জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
বিশ্ববরেণ্য ওই সকল মানুষের বিচার, বুদ্ধি, বিবেক ও সততা নিয়ে কটাক্ষ করা বিশ্বে আমাদের হাস্যকর করে তুলছে। আমরা যদি মনে করি উট পাখির মত মাথা গুঁজে বালুতে কিছু লুকিয়েছি, আমি কাউকে দেখিনি তাই কেউ আমাকেও দেখছে না। উট পাখির মত মনে করলে চলবে না, সবাই আমাদের দেখছেন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে, নীরবে ধ্বংস করা হচ্ছে একটি দেশের গণতন্ত্র, কাঠগড়ায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনেও বিচারিক হয়রানির কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে গণতন্ত্রহীনতার কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে বিশ্বের এক নম্বর গণমাধ্যম বলা হয়ে থাকে। তাদের যে কোন প্রতিবেদন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য। দেশের মানুষ, সরকার ও বিরোধীদলের সাথে কথা বলে নিউইয়র্ক টাইমস এই প্রতিবেদনটি করেছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। এটাকে গুরুত্ব দেয়া জরুরি, না হলে জাতি হিসেবে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে প্রকাশ, সরকার নির্বাচনের আগে বড় বড় পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদে প্রচুর পদোন্নতি দিয়েছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে, গণমাধ্যম বলছে, সরকার একটি শ্রেণীকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। তাদের কোন কাজ নেই, নিজেদের কাজই করবে তারা। দেশে এমনিতেই অর্থের অভাব, সরকার যে রাজস্ব আদায় করছে তাতে হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতো পদোন্নতিতে সার্ভিস আরো খারাপ হবে। লোকজন বেশি হওয়ায় কাজ আরো খারাপ হবে। সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে জিততে হবে। সরকার পদন্নোতি দিয়ে জনগণের পয়সায় নির্বাচন প্রভাবিত করতে চায়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন চালু করেছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে, অন্য কারো এই প্রশাসন দিয়ে দেশ চালানো কঠিন হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে সরকার। আগামীতে অন্য কোন সরকার এলে তাদের খুবই খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে সরকার দেশের তরুন সমাজ ধ্বংস করেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করেছে বর্তমান সরকার। আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি ধ্বংস ও বিপর্যস্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে যাচ্ছি। আমাদের দায় আছে, রাজনৈতিকভাবে আমরা এর বিরোধিতা করেই যাবো। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভালো সমাজ উপহার দিতেই আমাদের রাজনীতি।