খবর ৭১: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে গিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটানো, জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি সাধন ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৩৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (৩০ জুলাই) বিকালে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের নতুনবাজার পাটলাই নদী দিয়ে ট্যাকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে তাদের আটক করা হয়। সোমবার (৩১ জুলাই) পুলিশ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন-চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মান্দারখিল গ্রামের আনোয়ারুল হকের ছেলে বুয়েটের মেটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আফিফ আনোয়ার (২৪), টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার তক্তারচয়ালা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে বখতিয়ার নাফিস (২৪), মাগুরার আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. সাইখ সাদিক (২১), ঢাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে ইসমাইল ইবনে আজাদ (২১), চাঁদপুরের সালেহ আহম্মেদের ছেলে সাব্বির আহম্মেদ (২১), বাগেরহাটের শওকত আলীর ছেলে তাজিমুর রাফি (২০), চট্টগ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে মো. সাদ আদনান অপি (২২), জামালপুরের সেলিম সরকারের ছেলে মো. শামীম আল রাজি (২০), নওগাঁর আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. আব্দুলাহ আল মুকিত (২৩), শেরপুরের ফজলুল হক শাহিনের ছেলে মো. জায়িম সরকার (২১), ফেনীর মাহবুবুল হকের ছেলে হাইছাম বিন মাহবুব (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাইমুল হকের ছেলে মাহমুদুর হাসান (২২), সাতক্ষীরার ওবায়দুল্লাহর ছেলে খালিদ আম্মার (২১), রাজশাহীর এন্তাজুল হকের ছেলে মো. ফাহাদুল ইসলাম (২৩), রাজশাহীর ওমর ফারুকের ছেলে তানভির আরাফাত ফাহিম (২১), ঢাকার এফ এম আনিছুর রহমানের ছেলে এ টি এম আবরার মুহতাদী (২১), পাবনার মাছুদুর রহমানের ছেলে মো. ফয়সাল হাবিব (২০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মতিউর রহমানের ছেলে আব্দুল বারি (২৪), খুলনার সিদ্দিক হেলালের ছেলে আনোয়ারুল্লাহ সিদ্দিকী (২৮), বাগেরহাটের সেকান্দার আলীর ছেলে মো. বাকি বিল্লাহ (২৮), কুমিল্লার মিজানুর রহমানের ছেলে মাহাদি হাসান (২৩), নারায়ণগঞ্জের এ এম এম মুছার ছেলে আলী আম্মার মৌয়াজ (২৫), সিরাজগঞ্জের হায়দার আলীর ছেলে টি এম তানভির হোসেন (২৬), ভোলার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রাশেদ রায়হান (২৪), নোয়াখালীর জামাল উদ্দিনের ছেলে সাকিব শাহরিয়ার (২৩), নীলফামারীর সুলতান আলীর ছেলে ফায়েজ উস সোয়াইব (২৪), নোয়াখালীর মোখলেছুর রহমানের ছেলে আব্দুর রাফি (২৫), চট্টগ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আশ্রাফ আলী (২৫), কুষ্টিয়ার মোসাদ্দেক হোসেনের ছেলে মো. মাহমুদ হাসান (২৫), কুমিল্লার ফজলুল হকের ছেলে মো. এহসানুল হক (২৪), চট্টগ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে মাঈন উদ্দিন (২৪), টাঙ্গাইলের আবু হানিফের ছেলে রাইয়ান আহম্মেদ সাজিদ, বাগেরহাটের হায়াত আলীর ছেলে তানিমুল ইসলাম ও ঢাকার আবেদ আলীর ছেলে মো. আব্দুল্লাহ মিয়া (১৮)। এদের মধ্যে ২৬ জন বুয়েটের ছাত্র।
পুলিশ জানায়, তাহিরপুর বাজারের নৌকা ঘাট থেকে রোববার সকাল ৭টায় একটি নৌকায় করে বুয়েটের ২৬ শিক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও ৮ শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জনের একটি দল টাঙ্গুয়ার হাওরের ঘুরতে যান। টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরার পর দুপুরের দিকে পাটলাই নদী দিয়ে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে গোপন ষড়যন্ত্র এবং ধর্মীয় জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার একটি বৈঠক চলে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাহিরপুরের নতুন বাজারের সামনে নৌকাটি আসলে পুলিশ পর্যটকবাহী নৌকাটি থামিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার বিকালে এসআই রাশেদুল কবীর বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন।