তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

0
117

খবর ৭১: উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নীলফামারী ও লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।বুধবার (০৫ জুলাই) সকাল ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ১৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় তিস্তা আবারো ফুলে ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে চিরচেনা রূপ। হেঁটে পাড়ি দেওয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝিদের। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারে।

এদিকে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ফসলের খেত পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির শঙ্কায় কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ায় গবাদি পশু-পাখির খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের পশ্চিম চরখালিশা গ্রামের আতিয়ার রহমান বলেন, তিস্তার পানি কখনও বাড়ছে, আবার কখনও কমছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি নিমজ্জিত হয়ে যাবে। আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের ছোটখাতা চরের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বেড়েছে। গতকাল রাতে পানির প্রবাহ বেড়ে যায়। ঘরে পানি উঠেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে আছি আমরা।

এদিকে সোমবার (০৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১০টার দিকে নদীর তীরবর্তী এলাকাজুড়ে সতর্কতা জারি করে মাইকিং করেছেন উপজেলা প্রশাসন। বাংলাদেশ অংশে তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি করেছে ডিমলা উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী এলাকাজুড়ে সতর্কতা বার্তা জারি করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের দোমোহনিতে উজানের ঢলে পানি বাড়ায় ২৪ ঘণ্টা পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। এজন্য আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশ দিয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করেছি। বন্যা মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করছি।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা  বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় পানি প্রবাহিত হয়েছিল ৫১ মিটার ৯৫ সেন্টিমিটার কিন্তু রাত ১০টার দিকে নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই হয়েছিল। আজ সকাল ৬ টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুপুরের দিকে পানি কমে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here