উজিরপুরে একটি খালের বাঁধ নির্মাণে তিন বছর ধরে বোরো চাষীরা বিপাকে

0
112

বিএম রবিউল ইসলাম উজিরপুর (বরিশাল) সংবাদদাতা: বরিশালের উজিরপুরে ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে একটি পুনর্নির্মাণের সেতু জন্য খালে দেওয়া হয়েছে বাঁধ। ওই বাঁধ ভোগাচ্ছে কৃষকদের। উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা – চৌমোহনী খালের দক্ষিণ পাসে কাংশী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি লোহার সেতু ছিল। সেখানে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতু পুনর্নির্মাণের জন্য আইবিআরপি প্রকল্পের অধীন ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৬৪ টাকার একটি প্রকল্প নেয় এলজিইডি। অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়নে এলজিইডি দরপত্র আহ্বান করে। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর মেসার্স রূপালী কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৮ জুলাই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার নয় মাসের কাজ আড়াই বছরেও শেষ করতে পারেননি। সেতু নির্মাণের কাজ এই পর্যন্ত ৮০ শতাংশ করেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামুরা – চৌমোহনী খালের দক্ষিণ কাংশী মসজিদ সংলগ্ন খালের মধ্যে দুটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প স্থানে বাঁধ দিয়ে মাটি কেটে রাখার ফলে আশপাশ ভেঙে যাচ্ছে এবং প্রকল্প স্থানে গার্ডার ব্রিজ নিচে মাটি ভরে গেছে। পাশাপাশি কাংশী উজিরপুর সড়কের কার্পেটিং অনেক অংশ ভেঙ্গ খালের বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের শুরু থেকে ঠিকাদারি কাজ নিয়ে গাফিলতি শুরু করেন। শুরুতে কিছু কাজ ধরে এক বছর ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন। বারবার ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও তিনি জানান, মানুষের কথায় নয় নিজের ইচ্ছায় সেতুর কাজ শেষ করবো। কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, গেছে বছর থেকে এ পর্যন্ত বাদ অবসানের জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। বারবার তাগিদ দিলেও ঠিকাদার খালের মধ্যে বাঁধ অপসারণ না করে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে একাধিকবার জানানো হয়েছে। দক্ষিণ কাংশী সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার নিজের প্রকল্পের অধীনে ৭ হাজার ১৪০ একর জমি রয়েছে। বাঁধের ফলে খালে পানি চলাচল বন্ধ থাকায় কৃষকদের পানি সরবরাহ করতে পারছিল না গেছে বছর। এবারও যদি বাঁধ ভেঙ্গে না দেয়া হয় বোরো মৌসুমে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হবে। বৃষ্টি হলে কিছু পানি দেওয়া হয়। তাতে কৃষকদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। সব মিলিয়ে বাঁধের ফলে বরাকোঠা, কাংশী, বোরকাঠী, আদাবাড়ি, চৌমোহনী, দক্ষিণ কাংশে গ্রামের
১০ টি সেচ প্রকল্পের প্রায় ২০ হাজার একর জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষক আবু জাফর হাওলাদার বলেন,আমরা এত কৃষক সকলেই ঠিকাদারের কাছে জিম্মি দশায় ভুকছি। অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজে আসছে না।
শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা,আব্দুল হালিম বলেন,গত তিন বছর পূর্বে ব্রিজ নির্মাণের জন্য খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে। ফলে গত বছর ওই এলাকার পাঁচটি বোরো ব্লকে সেচ সংকট দেখা দেয়।ফলে বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন কৃষকেরা। অভিযোগের ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রূপালী কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী অমল দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি ফোন ধরেননি। ঠিকাদার অরুন সুমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেসার্স রূপালী কনস্ট্রাকশনের সাথে যোগাযোগ করেন আমি কিছু বলতে পারবো না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কপিল বিশ্বাস বলেন, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি। বাঁধের বিষয়টি আমার জানা নেই।
উপজেলা প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন,
দ্রুত কাজ শেষ করে। কৃষকদের সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। উজিরপুর
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন বলেন,কৃষকদের স্বার্থে সংরক্ষণে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আমি সদ্য যোগাযোগ করছি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে বাঁধ অপসারণ ও কৃষকদের সেচসুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here