খবর৭১: জাপান থেকে আসা দুই শিশুর বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের আপিল শুনানি ঢাকা জেলা জজ আদলতেই হবে। এ আদালত পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতে আপিল শুনানি চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নাসিমা আক্তার লাভলী। দুই শিশুর মধ্যে এখন বড়জন মায়ের কাছে ও ছোটজন বাবার সঙ্গে রয়েছে।
শিশুদের জাপানি মা ডা. এরিকো নাকানোর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। শিশির জানান, আপিল বিভাগ নির্দেশ দিয়েছিলেন ৯০ দিনের মধ্যে ঢাকা জেলা জজ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি করতে।
কিন্তু ইমরান শরীফ আপিল কোর্টে মামলা পরিচালনা না করে জেলা জজ আদালতের পরিবর্তে হাইকোর্টে আপিল শুনানি চেয়ে আবেদন করেন, যা খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ জুন ঢাকা জেলা জজ আদালতে আপিল শুনানির জন্য দিন ঠিক করা আছে।
গত ৯ মার্চ জাপান থেকে আসা দুই শিশুর জিম্মা নিয়ে ইমরান শরীফের আপিল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ঢাকার জজ আদালতকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
শিশুদের মা এরিকোর আইনজীবী শিশির মনিরের তথ্যমতে, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়।
তারা হলো- জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। তিন মেয়ে টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি ইমরান তার স্ত্রী এরিকোর সঙ্গে ডিভোর্স আবেদন করেন। এরপর ২১ জানুয়ারি ইমরান স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তাতে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ তার প্রস্তাব নাকচ করে। পরে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাস স্টপেজ থেকে ইমরান তাদের বড় দুই মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি দুই মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।