খবর৭১ঃ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগপন্থি অন্তত ১০টি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের একটি জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। আগামী ২৯ মে লিবারেল ইসলামি জোট নামে এ জোটের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, মাইজভান্ডারের পীর ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমেদ ও বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করে এ জোট গঠিত হবে। অন্য দলের প্রধানরা পদাধিকারবলে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন।
সূত্র বলছে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেই এই জোটটি আত্মপ্রকাশ করছে। এখন পর্যন্ত এই জোটে দলের সংখ্যা ৬টি। এতে আরও আটটি দল যুক্ত হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
নতুন জোটের দলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, আশেকানে আউলিয়া পরিষদ, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ।
এ জোটের অন্যতম উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রচর্চায় বিশ্বাসী এই জোট হবে তরিকত ও কওমিপন্থি আলেম ও আধুনিক শিক্ষিতদের প্ল্যাটফর্ম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলামি মূলবোধের ভিত্তিতে এ জোট গঠিত হয়েছে।
জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাঁচ বছর ধরে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করে ১৬ মে সুপ্রিম পার্টির কার্যালয়ে এই জোট গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। আরও আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ২৯ মের আগেই দলগুলো জোটে যোগ দেবে বলে নিশ্চিত করেছেন নেতারা।
যদিও এই জোটে যুক্ত হতে আলোচনা করছিল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। তবে দলটি এই প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে।
গত শনিবার (১৩ মে) রাজধানীর ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে ৯টি দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে জোটের একমাত্র নিবন্ধিত দল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ‘ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’ প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপরই অনিবন্ধিত দলগুলো নিয়েই এ জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে ছিল। তিনি সরকার সমর্থক বলে পরিচিত। অন্যদিকে মাইজভান্ডার দরবার শরিফের পীর সৈয়দ সাইফুদ্দিন আল হাসানীও আওয়ামী ঘনিষ্ঠ। তার দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এবার নিবন্ধন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে নতুন এ জোটে মাওলানা ইসমাইল হোসেনের বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টিও যোগ দিতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর টানা কয়েক বছর ওই দিনটিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ দলটির সমাবেশের কারণে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির কর্মী-সর্মথকও কম নয়। গত কয়েক বছর দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তি দেখিয়েছে দলগুলো।
সরকারঘনিষ্ঠ ইসলামি দল ও ছোট দলগুলোকে একত্র করে আগামী নির্বাচনে তাদের অংশ নেওয়া নিশ্চিত করতে সরকারের ভেতর থেকে চেষ্টা আছে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে তাদের দিয়ে অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে।