খবর ৭১: শারীরিক পরীক্ষার জন্য শনিবার ভারতের এলাহাবাদের প্রয়াগরাজ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের সাবেক বিধায়ক আতিক আহমেদ এবং তার ভাই আশরাফকে। তাদের দু’জনকে কড়া পুলিশি পাহারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিল সংবাদমাধ্যম। মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে ঢোকার আগে হাঁটতে হাঁটতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন আতিক। এরইমধ্যে আততায়ীরা বেরিয়ে এসেই আতিকের মাথা লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় আতিক।
শনিবার রাত ১০টার দিকে আতিক এবং আশরাফের চারপাশে পুলিশকর্মীদের একটা নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছিল। হাসপাতালে ঢোকার আগে সাংবাদিকরা আতিককে প্রশ্ন করেছিলেন, পুত্র আসাদের শেষকৃত্যে যেতে পেরেছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে আতিক বলেন, ‘ওরা (পুলিশ) আমাকে নিয়ে যায়নি, তাই যাওয়া হয়নি।’ হাঁটতে হাঁটতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। মুখে ক্যামেরা ফ্ল্যাশ, আলোর ঝলকানি, আর সামনে বুম ধরে রেখেছিলেন সাংবাদিকরা। গুড্ডু মুসলিম নিয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিলেন আতিক। শুধু এইটুকুই বলেন, ‘আসল কথা হল যে, গুড্ডু মুসলিম…।’ আর তার পরই সাংবাদিকদের ভিড় থেকে আততায়ীরা বেরিয়ে এসেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে আতিকের মাথা লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আতিক। গুলি করে মারা হয় তার ভাই আশরাফকেও।
একই হাতকড়ায় বাঁধা ছিলেন আতিক এবং আশরফ। আতিকের মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠছে, গুড্ডু মুসলিম নিয়ে কী কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি? সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
অপহরণের একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০১৯ সাল থেকে কারাগারে ছিলেন আতিক। পুলিশের পক্ষ থেকেই তার জীবন হুমকির মধ্যে রয়েছে, আদালতে আবেদন করা হলে গত মাসেই নাকচ করে দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
২০০৫ সালে তৎকালীন এলাহাবাদ পশ্চিমের বহুজন সমাজ পার্টির বিধায়ক রাজু পাল খুনের ঘটনায় অভিযোগ ওঠে আতিক এবং আশরাফের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার পর থেকেই লাগাতার সমস্যা বাড়ছিল আতিকের। গত মাসে রাজু খুনের একমাত্র সাক্ষী উমেশ পাল খুন হয়। অভিযোগ ওঠে, ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল আতিকের তৃতীয় ছেলে আসাদ। ১৩ এপ্রিল পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’ নিহত হয় সে। জেলে বসেই ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন আতিক।