খবর ৭১:বাংলাদেশে একটি ‘মডেল’ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য দেশটির সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে নানা বিষয়, বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয় দুই মন্ত্রীর মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় মার্কিন। এ ক্ষেত্রে একটি ‘মডেল’ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠকে শেষে ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (১০ এপ্রিল) সেখানকার একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব তথ্য জানান আবদুল মোমেন।
মোমেন-ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, র্যাব, ব্যবসা-বাণিজ্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনসহ আরও অন্যান্য ইস্যুতে আলোচনা হয় বলে জানান মোমেন।
ওয়াশিংটন কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়েছে তা জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। তারা চান অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। একটা মডেল নির্বাচন করতে হবে। আমি বলেছি, অবশ্যই; এটা আমাদেরও উদ্দেশ্য। আমরাও মডেল নির্বাচন চাই।’
বৈঠকের শুরুতে ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও সারা বিশ্বের দৃষ্টি রয়েছে’ উল্লেখ করে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘এ অঞ্চল এবং সারা বিশ্বের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়, তা নিশ্চিতের বিষয়ে সবার মনোযোগ রয়েছে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে এ ব্যাপারে আপনাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সাহায্য চাই। আপনারও (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সাহায্য করেন, যেন একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারি।’
মোমেন বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষককে স্বাগত জানাতে চাই। আমরা বলেছি, তোমরা যত পার পর্যবেক্ষক পাঠাও। গত নির্বাচনে ২৫ হাজার পর্যবেক্ষক ছিল। কিন্তু পর্যবেক্ষক অবশ্যই বাংলাদেশি অরিজিন কেউ হতে পারবে না, যারা রাজনৈতিক দলের ব্যানারে পর্যবেক্ষক হতে চাইবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘গত ১৪ বছরে কয়েক হাজার নির্বাচন হয়েছে। কিছু অনিয়ম হয়েছে। সেখানে কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে। আরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন একটা স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। তবে সরকারের একার পক্ষে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন মোমেন। তার ভাষ্য, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু শুধু সরকার করতে পারবে না। সেটার জন্য সব বিরোধী দলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন,‘৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ব্যাপক পরিসরে বেড়েছে।’
অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সম্পর্ককে আরও গভীর ও জোরালো করার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।