খবর ৭১: মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে এসেছেন বলে জানাচ্ছেন থাই কর্মকর্তারা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি’র নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে, অস্থিরতা শুরু হয় মিয়ানমারে। যার ফলে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং সশস্ত্র বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
থাই কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমারের কারেন রাজ্যের মায়াওয়াদি শহরে সংঘর্ষ চলছে। সীমান্তবর্তী শহরটি থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের কাছে অবস্থিত।
তাক প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে জানান, মিয়ানমারের ১০টি এলাকা থেকে অন্তত ৩ হাজার ৯৯৮ জন থাইল্যান্ডের পালিয়ে এসেছে।
বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সশস্ত্র যোদ্ধারা সীমান্ত রক্ষী চৌকিতে হামলা চালালে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দাতব্য কর্মী রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ‘মানুষের কাছে এখন পর্যাপ্ত খাবার পানি বা কোনো টয়লেট নেই। গতকাল থেকে অনেক মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করেছে। কেউ কেউ এখনও সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় আছে।’
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর কেএনএলএ-র মতো কিছু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী অভ্যুত্থানবিরোধীদের সঙ্গে মিলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। মিয়ানমারের জেনারেলরা তাদের দমনে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ করছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩ হাজার ২১২ জনকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনারা, ১৭ হাজারের বেশি আছেন কারাগারে।
পর্যবেক্ষকরা বোমা ও স্থল হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন। গত সপ্তাহে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গ্রামে বোমা হামলায় শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হন।
তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করছে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে তারা। বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর জন্য অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের দায়ী করছে সেনারা।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সূত্র: আল জাজিরা