খবর ৭১: ঘুরেফিরে এমন প্রশ্নও আসছিল ‘আয়ারল্যান্ডকে কি একটু বেশিই সহজ প্রতিপক্ষ হয়ে গেল?’ ওয়ানডেতে দুটি ম্যাচ পুরো হয়েছিল, একটিতে ব্যাটিং করেছিল শুধু বাংলাদেশ; কোনোরকম পাত্তাই পায়নি। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশ দুইশ ছাড়ানোর পর পেয়েছে বড় সংগ্রহ।
কিন্তু সেই আয়ারল্যান্ডের কাছে এসেই থামলো বাংলাদেশের জয়রথ। টি-টোয়েন্টিতে নতুন ‘ব্র্যান্ড’-এর ক্রিকেটের স্লোগান তুলে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল সাকিব আল হাসানের দল। এরপর আইরিশদের দুই ম্যাচ হারিয়ে জয়ের সংখ্যা পৌঁছায় পাঁচে, যেটি রেকর্ডও। বাংলাদেশের সেই জয়রথ থেমেছে আইরিশদের বিপক্ষে।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১২৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৩৬ বল আগেই জয় তুলে নেয় সফরকারীরা। যেকোনো ফরম্যাটে টাইগারদের বিপক্ষে তাদের মাটিতে এই প্রথম জয়ের মুখ দেখলো আয়ারল্যান্ড।
১২৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মারমুখী শুরু করেন পল স্টার্লিং। অন্য প্রান্তের উইকেটটা অবশ্য নিয়ে নিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। ৯ বলে ৭ রান করা রস অ্যাডায়ারকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর ৭ বলে ৪ রান করে লরকান টাকার উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শরিফুল ইসলামের বলে।
কিন্তু আরেক প্রান্তে দলকে টেনে নেন স্টার্লিং। রিশাদ হোসেনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে যতক্ষণে ক্যাচ দেন তিনি, ততক্ষণে দলের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। দলীয় ১০৯ রানে আউট হওয়ার আগে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ বলে ৭৭ রান করেন তিনি। বাকি পথ টেনে নেন হেরি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্পার। ১৮ বলে ১৪ রান করে টেক্টর ও ৯ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্পার।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার যে বার্তা দেশের ক্রিকেটে, শুরুটা ছিল তেমনই। ফিওন হ্যান্ডকে প্রথম বলেই ফ্লিক করে চার হাঁকান লিটন দাস। ওই ওভারে আসে ৯ রান। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বল থেকেই ছন্দ পতনের শুরু হয় বাংলাদেশের।
মার্ক অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের বাজে বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। ৪ বলে ৫ রান করেন লিটন। তিন নম্বরে খেলতে নেমে রান পাননি নাজমুল হোসেন শান্তও। ৮ বল খেলে ৪ রান করে কার্টিস ক্যাম্পারের হাতে ক্যাচ দিয়ে হ্যারি টেক্টরের বলে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।
অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও ৬ বলে ৬ রান করে আউট হন। আগের দুই ম্যাচে রান পাওয়া উদ্বোধনী ব্যাটার রনি তালুকদারও পারেননি এদিন রান করতে। ৩ চারে ১০ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে যায় বাংলাদেশ।
এরপর দলকে অনেকটা একাই টেনেছেন শামীম হোসেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ বলে ৫১ রান করেন তিনি। ফিওন হ্যান্ডের বলে জর্জ ডকরেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শামীম। এছাড়া নাসুম হোসেন ১৭ বলে ১৩ ও তাওহিদ হৃদয় ১০ বলে ১২ রান করেন।
আইরিশদের পক্ষে ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মার্ক অ্যাডায়ার। ২ ওভারে ১০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন ম্যাথিউ হামফ্রিসও। এছাড়া ফিওন হ্যান্ড, হেরি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্পার, বেন হোয়াইট ও গ্যারেথ ডিল্যানি একটি করে উইকেট নেন।