খবর ৭১: চীন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ভিত্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি বলেছেন, চীনের দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হতে পারে।
তবে এ শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তখনই এগোনো যাবে যখন ‘পশ্চিম ও ইউক্রেন এ বিষয়ে প্রস্তুত হবে। ’
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মস্কোতে ফের বৈঠক করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। বৈঠকে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন। খবর বিবিসির।
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেছেন, ‘চীনের শান্তি পরিকল্পনার অনেকগুলো দফা ইউক্রেনের সংঘাত নিষ্পত্তির ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এটি তখনই সম্ভব, যখন পশ্চিম ও কিয়েভ এর জন্য প্রস্তুত হবে।
তবে রাশিয়া এখন পর্যন্ত তাদের এমন কোনো ‘প্রস্তুতি’ দেখতে পায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে গত মাসে ১২ দফার একটি পরিকল্পনা দেয় চীন। তবে সেখানে স্পষ্টভাবে রাশিয়াকে ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়নি। কিন্তু ইউক্রেন যেকোনো আলোচনার শর্ত হিসেবে রাশিয়াকে তার ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করার ওপর জোর দিয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার সর্বোচ্চ নেতার পাশে দাঁড়িয়ে জিনপিং বলেছিলেন, চীনের সরকার শান্তি ও সংলাপের পক্ষে। চীন ‘ইতিহাসের সঠিক দিকে আছে’।
তিনি আবারও দাবি করেছেন যে, ইউক্রেন সংঘাতে চীনের একটি ‘নিরপেক্ষ অবস্থানে’ রয়েছে। বেইজিং সম্ভাব্য শান্তি স্থাপনের কাজ করতে চাচ্ছে।
ইউক্রেন ইস্যু ছাড়াও শি জিনপিং ও পুতিন, দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য, শক্তি এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেছেন।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। আন্তর্জাতিকভাবে এটি ইউক্রেনে রাশিয়ায়র আগ্রাসন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রাশিয়ার এই সামরিক অভিযান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের সৃষ্টি করেছে। দাবি করা হয়, ৮.৮ মিলিয়নেরও বেশি ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হযয়েছে আরও লক্ষাধিক মানুষ।
সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়ে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, ইউক্রেন থেকে আসা হুমকির প্রতিক্রিয়ায় সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে ইউক্রেন দখল করার কোনো ইচ্ছা রাশিয়ার নেই।
পুতিনের অভিযোগ, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত রাখার জন্য রাশিয়ার দাবি উপেক্ষা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা।
পুতিনের দাবি ছিল, ইউক্রেনের দোনবাসের প্রধানত রুশ-ভাষী অঞ্চলের জনগণকে রক্ষা করার জন্যই সামরিক অভিযান। তার মতে দোনবাসের রুশ-ভাষী অঞ্চলের জনগণ আট বছর ধরে কিয়েভ শাসনে অপমানিত ও গণহত্যার শিকার হচ্ছিল।
সামরিক অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যদিও এর ফল ভালো হয়নি ইউরোপের জন্য। তাছাড়া সে সময় ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমদানি নির্ভর দেশগুলো সমস্যার মুখে পড়ে। পরে অবশ্য বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশ শস্য রপ্তানি শুরু করে।