খবর ৭১: রাজধানীর গুলিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২৩ জনের প্রাণহানির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় দুই ভবন মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন, ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের বেসম্যান্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টু। এরমধ্যে ওয়াহিদুর ও মতিউর সম্পর্কে আপন দুই ভাই।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) আসামিদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মাবুদ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রোববার (১২ মার্চ) দুদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির নাম কুইন টাওয়ার। গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের নর্থসাউথ রোডে সাততলা ওই ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৯ মার্চ রাতে রাজধানীর বংশাল থানায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পরের দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
বিস্ফোরণে ভবনটির তিনতলা পর্যন্ত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে স্যানিটারি ও গৃহস্থালি সামগ্রীর বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। বিস্ফোরণে ভবনটির দেওয়াল ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভেতরের জিনিসপত্র ছিটকে বাইরে পড়ে যায়। ভবনের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের কয়েকটি ভবন।
বিস্ফোরণের পরই উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার কাজ করে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়রাও উদ্ধারকাজে সহায়তা করেন।