খবর ৭১: সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আগের মতোই ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবন্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় নতুন বা প্রতিস্থাপক হিসেবে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে ‘সি’ ক্যাটাগরিভুক্ত প্রকল্পের অর্থছাড় পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। তবে যেসব প্রকল্প ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত এবং কোনোক্রমেই মেয়াদ বৃদ্ধির অবকাশ নেই, সেসব প্রকল্পের ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা অর্থ শতভাগ ব্যয় করা যাবে। এ, বি এবং সি সব ক্যাটাগরির প্রকল্পের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে।
সেই সঙ্গে আপ্যায়ন ব্যয়, ভ্রমণ ব্যয়, মনিহারি খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ৫০ শতাংশ ব্যয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগের নির্দেশনায় শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্রে আপ্যায়ন ব্যয়, ভ্রমণ ব্যয়, মনিহারি খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ৫০ শতাংশ ব্যয় করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের সই করা এ সংক্রান্ত পরিপত্র সব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। রোববার (১২ মার্চ) এ পরিপত্রে সই করেন উপ-সচিব।
সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে (পরিচালন ও উন্নয়ন) বরাদ্দ করা অর্থ কিভাবে ব্যয় করা যাবে, তা পরিপত্রে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩ জুলাই, ২১ জুলাই এবং ১৩ ডিসেম্বর সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে পরিপত্র জারি করা হয়। তাতে বিভিন্ন ব্যয়ে লাগাম দেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এখন নতুন নির্দেশনা আসলো।
নতুন পরিপত্রে যা বলা হয়েছে-
>> চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে পরিচালন বাজেটের অধীন প্রদর্শিত বরাদ্দ শতভাগ ব্যয় করা যাবে। তবে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা যাবে, প্রশিক্ষণ খাতে (প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ব্যতীত) বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে এবং পেট্রল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।
>> চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে উন্নয়ন বাজেটের অধীন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত নির্ধারিত ‘এ’ ক্যাটাগরি চিহ্নিত প্রকল্পে জিওবি অংশে বরাদ্দকৃত অর্থ শতভাগ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরি চিহ্নিত প্রকল্পে জিওবি অংশে বরাদ্দকৃত অর্থের ১৫ শতাংশ সংরক্ষিত রেখে অনুর্ধ্ব ৮৫ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। এছাড়া ‘সি’ ক্যাটাগরিভুক্ত প্রকল্পের অর্থ ছাড় পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
তবে আপ্যায়ন ব্যয়, প্রশিক্ষণ, ভ্রমণ ব্যয়, অন্যান্য মনিহারি, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি এবং আসবাবপত্র খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ, পেট্রল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।
>> নতুন প্রতিস্থাপক হিসেবে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ থাকবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, এসব খাতের বরাদ্দ করা অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত হতে এসব খাতে পুনঃউপযোজন করা যাবে না। ক্যাটাগরি (এ, বি, সি) নির্বিশেষে যেসব প্রকল্প ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত এবং কোনোক্রমেই মেয়াদ বৃদ্ধির অবকাশ নেই, সেসব প্রকল্পের ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা অর্থ শতভাগ ব্যয় করা যাবে।