খবর৭১: বাখমুতে টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের জীবন-মরণযুদ্ধ। পথে পথে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধ। নুনের খনি খ্যাত ইউক্রেনের এ অঞ্চলকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে মস্কো। কোণঠাসা হয়ে পড়ছে কিয়েভ।
চলমান এ অবস্থার মধ্যেই বাখমুত যুদ্ধের সবচেয়ে কৌশলগত দিকটি তুলে ধরলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৯টায় সিএনএন’র এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাখমুত দখলে নিলেই ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চল দখলের সব রাস্তা খুলে যাবে, ভাগ্য বদলে যাবে রাশিয়ার।’
বাখমুত হাতছাড়া হওয়ার প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে এ সত্য স্বীকার করলেন জেলেনস্কি। বললেন, রুশ সেনারা যদি বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ দখল করে তবে পূর্ব ইউক্রেনের মূল শহরগুলো দখল করার জন্য ‘উন্মুক্ত রাস্তা’ তৈরি হবে।
আরও বলেন, ‘আমরা জানি বাখমুতের পরে রুশ সেনারা আরও এগোতে থাকবে। তারা ক্রামাতোরস্ক, স্লোভিয়ানস্কে আঘাত হানবে। রুশদের জন্য বাখমুতের পরে ইউক্রেনের অন্যান্য শহর দোনেৎস্কের দিকে যাওয়ার উন্মুক্ত পথ তৈরি হবে। তাই আমাদের সেনারা সেখানে অবস্থান করছে।’
রুশ ভাড়াটে সৈন্য ওয়াগনারের সপ্তাহব্যাপী আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেনীয় সৈন্যরাও অঞ্চলটিতে কঠোর প্রতিরক্ষাও স্থাপন করেছে।
জেলেনস্কি বলেন, শহরটি ধরে রাখার জন্য দুটি দল আলাদা উদ্দেশ্য ও আলাদা প্রেরণা নিয়ে কাজ করছে। ‘আমরা বুঝি রাশিয়া সেখানে কী অর্জন করতে চাচ্ছে। তাদের শুধু কিছু একটা জয় করতে হবে। হোক সেটা কোনো ছোট বিজয়! এমনকি বাখমুতের সবকিছু ধ্বংস করে, প্রতিটি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে হলেও তা দরকার।’
তিনি বলেন, রাশিয়া যদি বাখমুতের উপরে তাদের পতাকা গাড়তে পারলেই প্রচার শুরু করবে যে তারা শক্তিশালী সেনাবাহিনী। যদিও বাখমুতের কোনো উল্লেখযোগ্য কিংবা কৌশলগত মান নেই। তবে ক্রামাতোরস্ক, স্লোভিয়ানস্কের সঙ্গে এর রাস্তা সংযোগ, উত্তর-পশ্চিমে ঘনবসতিপূর্ণ শিল্প শহুরে কেন্দ্র এর গুরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।
ন্যাটো গোয়েন্দারা অনুমান করেছেন, বাখমুতকে রক্ষা করতে নিহত প্রতিটি ইউক্রেনীয় সৈন্যপ্রতি কমপক্ষে পাঁচজন রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক মঙ্গলবার বলেন, ৩৮ জন শিশুসহ প্রায় ৪ হাজার বেসামরিক নাগরিক বিধ্বস্ত শহরে রয়ে গেছেন।