খবর ৭১: আজ বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি উদ্বোধনপূর্ব সমাবেশে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এনটিভির ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনির্বাচিত সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঢাকা মহানগরী এখন বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এইসব বিষয়ে যাদের নজরদারি করার কথা তারা সবাই দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে পড়েছে। কোন নজরদারি হচ্ছে না। যার সর্বশেষ প্রতিফলন গতকাল রাজধানীর সিদ্দিক বাজারের একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে ১৮ জনের মৃত্যু। হতাহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শতাধিক।
আজ বুধবার (৮ মার্চ) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি উদ্বোধনপূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। পরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ বিশ্ব নারী দিবস, এই দিনটি সারা পৃথিবীতে নারীরা তাদের উন্নয়ন, মুক্তি ও ক্ষমতায়নের জন্য পালন করে আসছে, বাংলাদেশেও এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নারীদের ক্ষমতায়ন ও সচেতনতার মাধ্যমে সমাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব আর এই বিষয়টি প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনিই সর্বপ্রথম মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর উত্তরসূরী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক যে আজকে নারী প্রধানমন্ত্রী জোর করে হলেও, তার সময়েই নারী নির্যাতন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারীরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন অতীতে আরও এরকমভাবে হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ একজন সাবেক সংসদ সদস্য হলেও শুধু কথা বলার অপরাধে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়, কোনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় প্রথমে পাঁচ বছর, পরবর্তীতে ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, জামিন প্রাপ্য হলেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না, জামিন থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’
মহিলা দলের নারী নেত্রীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের আরও বেশি সোচ্চার ও সংগঠিত হতে হবে, সংগঠিত করতে হবে দেশের সমগ্র নারী সমাজকে। অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা আমাদের বড় কাজ, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিশেষ করে নারীদের উপর কোথাও নির্যাতন-নিপীড়ন হলে আপনাদেরকে প্রথমেই প্রতিবাদ করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক নারীর, এক শিক্ষার্থীর উপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়, তার প্রতিবাদে কোন নারী সংগঠন বা নারীদের তেমনভাবে প্রতিবাদ জানাতে দেখিনি। আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় উন্নয়নশীল-উন্নয়নশীল কথা বলেন অথচ কাতারে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দেখা গেল অনুন্নত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কোথায় গেল আপনাদের উন্নয়ন ও উন্নয়নশীলতা।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানসহ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নারী নেত্রীরা।