খবর ৭১: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হলেন। রোববার তাকে গ্রেপ্তার করতে বাসবভবনে সামনে পুলিশ গেলে সমর্থকরা বাধা দেন। তারা বলেন, নেতার আগে সমর্থকদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান গ্রেপ্তার হতে পারেন এমন সম্ভাবনার মধ্যে লাহোর শহরে তার বাড়ির সামনে সমবেত হন তার সমর্থকরা। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে লাহোরের জামান পার্ক এলাকায় তার বাসভবনের বাইরে পুলিশের একটি দল আসে। এরপর ইসলামাবাদ পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। তাদের মধ্যে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। তারা ইমরান খানের পক্ষে মিছিল দিতে থাকেন।
তারা পুলিশকে জানান, নেতা ইমরান খান বাড়িতে নেই। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ইসলামাবাদ পুলিশের প্রধান জানান, তারা শূন্য হাতে ফিরবেন না। কিন্তু স্থানীয় সময় দেড়টায় পুলিশ সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়। ইমরান খান কোথায় আছেন তা নিয়ে যখন নানা আলোচনা চলছিল তখন বিকেল ৫টার কিছু আগে পার্টির একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইমরান খান। এই বক্তব্য টেলিভিশনে সম্প্রচারও করা হয়। ইমরান খান তার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে মাথানত করবো না। তিনি বলেন, দেশ এখন কঠিন দুঃসময় পার করছে। অর্থনীতিতে ধস নামিয়েছে সরকার।
গত সপ্তাহে আদালত একটি মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বিদেশের নেতাদের কাছ থেকে যেসব উপহার পেয়েছিলেন সেগুলোর কথা তিনি সঠিকভাবে জানাননি। ইমরান খান মামলাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন।
ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তাদের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকট পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হবে। গত বছর পার্লামেন্টের এক ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। এগুলোর মধ্যে তার রাজনৈতিক দলের জন্য অবৈধ অর্থ সংগ্রহ এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার উস্কানি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ইমরান খান গ্রেপ্তার এড়াতে একটি মামলায় দু’সপ্তাহের জন্য জামিন পেয়েছিলেন। গত বছর একটি বিক্ষোভ সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ইমরান খান আহত হন। তার আইনজীবীরা এর আগে স্বাস্থ্যগত ও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ইমরান খানের সশরীরে আদালতে হাজির হওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন, তবে আদালতে এসব আবেদন খারিজ হয়ে যায়। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন গত বছর ইমরান খানকে সরকারি পদে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে। তার বিরুদ্ধে বিদেশি নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসামগ্রী এবং সেগুলো বিক্রি করে পাওয়া অর্থের কথা সঠিকভাবে না জানানোর অভিযোগ আনা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমরান আদালতে মামলা করেছেন। ইমরান খানের সমর্থকরা এর আগেও তাকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করার কথা বলেছেন।-বিবিসি ও ডন