খবর ৭১: টেকসই উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের এসডিজি বিষয়ক বিশেষ দূত বেলজিয়ামের রানি মাথিল্ডে মেরি ক্রিস্টিন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেলজিয়ামের রানি এসডিজি ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, রোহিঙ্গা, জলবায়ু, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
এসডিজি বিষয়ে আলাপকালে শেখ হাসিনা বলেন, এসডিজির সবগুলো এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজির এজেন্ডাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছি।
সারা বিশ্বের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে অস্থিতিশীলতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করেছে, মানুষ দুর্ভোগে আছে। অবিলম্বে এ যুদ্ধ বন্ধ করার উচিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের অগ্রগতি, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায় ও শিশু শিক্ষার প্রশংসা করেন বেলজিয়ামের রানি। রানি বলেন, তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখে খুব খুশি।
এ সময় রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, বিচার বিভাগ, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেক্টরে নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা নারীদের সহায়তার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রাথমিক সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে প্রায় ৩০ প্রকার ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক দিক থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের যখন আশ্রয় দেওয়া হয় তখন তাদের হাজার হাজার নারী গর্ভবতী ছিলেন। সেসব নারীদের চিকিৎসায় সরকার সেখানে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে।
এছাড়া কক্সবাজার থেকে অধিকতর উন্নত পরিবেশে সাময়িক বসবাসের জন্য ৩৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাষাণচরে স্থানান্তর করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
দুযোর্গ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সফলতা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। সাম্প্রতিক ঘুর্ণিঝড় ও অন্যান্য দূর্যোগে হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
তিনি বলেন, সরকার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, টেকসই বাড়ি নির্মাণ করেছে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ৮৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় তার সরকার জলবায়ু ফান্ড গঠন করে উপকূলে গ্রিন বেল্ট, বাঁধ ও টেকসই বাড়ি নির্মাণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ম্যারিটাইম অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সচিব মো. খুরশিদ আলম।